তিনি আবার ফিরবেন, ফিরবেন এই বাংলার মাটিতে
যদি বঙ্গবন্ধুর রক্ত এক বিন্দুও থেকে থাকে তার ধমনীতে,
তবে অচিরেই ফিরবেন এই বাংলার মাটিতে।
হয়তো ঘটনার আকস্মিকতায় তাকে ছাড়তে হয়েছিল দেশ
তাতে ভেবোনা এখানেই ইতি, এখানেই তার শেষ,
তিনি অচিরেই ফিরবেন তার সোনার বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধুর রক্ত ভয় করে না,
করলে, ইতিহাস আর সত্য থাকে না।
হয়তো কিছু ভুল ছিল তার, ভুল মানুষেরই হয়
তাই বলে তার সহস্র অর্জন ম্লান হবার নয়,
ভুল মানুষেরই হয়।
নবীনের বুকে গুলি! বলো, একি তার মনোরথ?
যাদের জন্য গড়েছেন তিনি প্রমত্তা পদ্মায় আকাশ ছোঁয়া পথ।
যাদের জন্য গড়েছেন কর্ণফুলী টানেল, তরুণের স্বপ্নচারি রাইড
মহাকাশে উড়িয়েছেন বাংলার গৌরব বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট।
যাদের জন্য গড়েছেন বিলঝিল মাঝে পর্বতসম সড়ক পথ
অতি সরুকে অতি প্রশস্ত, যেন চন্দ্রালোকে চলার রথ।
যাদের জন্য গড়েছেন চব্বিশ ঘন্টার বিরামহীন বিদ্যুৎ বলয়
সহস্র ভঙ্গুর টিনের ঘর রূপ পেয়েছে আজ বহুতল শিক্ষালয়।
যাদের জন্য গড়েছেন তিনি পরমাণবিক তড়িৎ ব্যবস্থা
লক্ষ কিলোমিটার করেছেন পায়ে হাটার পথকে প্রশস্ত পাকা রাস্তা।
ফোরলেন সিক্সলেন সার্ভিসলেন শব্দ গুলো ছিল বাংলায় অজানা
যাদের জন্য হলো তা তার হাত দিয়ে কিনে আনা।
যাদের জন্য গড়লেন তিনি কল্পনার মেট্রোরেল
যেন রাজধানীর আকাশে উত্তর দক্ষিণ রোলারকোষ্টারের খেল।
যাদের বিশ্বপযোগী তৈরী করতে গড়লেন আইসিটি ডিপার্টমেন্ট
তাদের বুকেই ছুঁড়বেন বুলেট! বাহ! কি চমৎকার সেন্টিমেন্ট!
যাদের আগামীর ইবাদত সুখময় করতে গড়লেন পাঁচ শতাধিক মডেল মসজিদ
তাদের বিরুদ্ধেই তার হৃদে জন্ম নিবে এমন হীন আক্রোশী জিদ!
এ কথা বিশ্বাস করাও যে পাপ
পবিত্র গতরে কলঙ্ক দিলে করবে না খোদা মাফ।
আবু সাঈদ, মুগ্ধ সহ শত শত তরুণের বুকে গুলি, ছিল কি তার নির্দেশ?
না, বোকা কিছু পুলিশ পালন করেছে অতি উৎসাহী কিছু দুষ্ট অফিসারের আদেশ।
সন্তানের জন্য প্রাসাদ গড়ে পারে কি জননী সে সন্তান করিতে বধ?
গভীর রাতের খোলা আকাশে তাকিয়ে ভাবো, বিবেক দেয় কি মত।
তারপরও সত্য বলি, কতক দুষ্ট লোক ছিল তার সাথে
তোমাকে আমাকে শতভাগ ভালোবাসা তিনি দিতে পারেন না যাতে।
তাদের ভাগে কম পড়ে যাবে, এই শঙ্কা নিয়ে বেকে
একটি অদৃশ্য প্রাচীর দিয়ে রেখে ছিল তার চতুর্পাশ ঢেকে।
তাই প্রাণ খুলে চোখ মেলে দেখতে পাননি তিনি সব
তার আষট্টি হাজার বর্গমাইলের ঘরে কোথায় কষ্ট কান্না কোথায় কলরব।
তিনি তো অপেক্ষায় ছিলেন তোমাদের, তোমরা বড় হয়ে ধরবে তার ছেড়ে দেয়া নৌকার হাল
এসব পেটভারী মাঝি মাল্লা ছুড়ে ফেলে নদীতে উড়াবে তরীতে নব পাল।
একটি অশুভ ধূমকেতুর আঘাত সব দিলো লন্ডভন্ড করে
ভেবো না মৃত্যু ভয়ে সে পালিয়েছে, তাঁকে পাঠানো হয়েছে জোর করে।
গণভবনে সেদিন যারা দুই চার জন ছিল বিদায় ক্ষণে
একটি বার গিয়ে কথা বলে দেখো তাদের সনে,
এক টুকরো শাড়ি আচ্ছাদিত দেহখানা নিয়ে তিনি উড়েছিলেন আকাশে
হৃদয়ের ষোল আনাই রেখে গেছেন এই পদ্মা মেঘনার মহুয়া মাতাল বাতাসে।
তোমরা টিবি স্কীনে দেখেছো সেদিন আকাশে উড়েছে হেলিকপ্টার
আমি তার শব্দে খুঁজে নিয়েছি বাংলার আকাশ মাটির চিৎকার।
তোমরা দেখেছো একজন দুষ্ট নারীর পার্শ্ব দেশে পলায়ন
আমি দেখেছি একজন অসহায় জননীর বুকের রক্তক্ষরণ।
তোমরা দেখেছো পশ্চাত আমি দেখেছি তার সম্মুখ
তোমরা দেখেছো পিঠটান আর আমি দেখেছি তার ভাঙা বুক।
তোমরা দেখেছো সূর্য গ্রহণ আমি দেখেছি রাহুর গ্রাস
তোমরা দেখছো ধ্বংসাস্তুপ আর আমি দেখেছি সত্যের ক্রাশ।
আমি রাজনীতি করি না, তাঁকে চিনেছি তার কর্ম দিয়ে
বিশ্বাস! ফিরবেন তিনি অচিরেই বুক ভরা নিঃশ্বাস নিয়ে।
ভাঙতে নয় গড়তে
মারতে নয় মরতে।
শাহাবাগ চত্বরে দাঁড়িয়ে ম্যাগজিন ভর্তি একটি পিস্তল ছুড়ে ফেলে তোমাদের দিকে
আবু সাঈদের মত দু'হাত প্রসারিত করে বলবেন, " নাও, এবার টিগার চেপে যাও একে একে,
বাঙালিকে জীবনের চেয়েও অধিক ভালোবেসে পেলাম না এতটুকু সুখ,
যাদের জন্য এত করলাম তাদের দৃষ্টিতেই আমি নিন্দিত মুখ!
ঝাঝরা করে দাও! ঝাঝরা করে দাও! ঝাঝরা করে দাও আমার বুক।"
সেদিন পুরো গ্রীস কেঁদেছিল সক্রেটিসকে হত্যা করে
মনে রেখো, আমাদেরও কাঁদতে হবে দু'দিন আগে কিংবা পরে।
জননীর আঁচলে আগুন ধরিয়ে করো যদি উল্লাস
প্রকৃতির লেখা সত্য বলে, হতে হবে সকলকে নাশ।
অধম করিতেছি আজ গলা ফাটিয়ে চিৎকার,
হবে না, হবে না বাংলায় তার মত কেউ আর।
অনেক ভালো দেখেছি এই ত্রিশ বছর ধরে
তার মত করেনি কাজ কেউ এই বাংলার ঘরে ঘরে।।