আমি দূর করি মানবের শত শঙ্কা,
আমি বিজয়ী শিঙ্গার মহাডঙ্কা!
আমি নির্ভয়ে বাধার প্রাচীর করি চূর্ণ,
আমি তরুণ, মহাশক্তিতে পরিপূর্ণ!
আমি গর্জন দিয়া মিথ্যাকে করি নির্বাক,
আমি মিথ্যার মহাধ্বংস, সত্যের জয়ডাক!
আমি হুতাশন! ঝঞ্জাট পুড়ে করি ছারখার,
আমি সিন্দুতে মহাহিল্লোল খেলা দুর্বার!
আমি অন্যায়ের প্রতিষেধক সদা-নিরন্তর!
আমি বর্বরতা দেখে হই টাইফুন, মরুঝড়।
আমি স্বৈরাচার পতনের ধুন্ধুমার-দাঙ্গা!
আমি রণাঙ্গনে রক্তে রঞ্জিত-রাঙ্গা!
আমি যুদ্ধের ময়দানে রক্তে করি স্নান,
আমি উড়ায়েছি বিজয়ী ধ্বজা চির অম্লান।
আমি ভূগর্ভে আঘাত করিয়া,কাড়িয়া আনিবো মুক্তা-মণি
,
আমি দানবের ভয়!মানবের জয়!নিরাতঙ্ক কালফণী!
আমি ভ্যাম্পেয়ারের বক্ষ ছিড়িয়া,ক্ষরণ করিব রক্ত,
আমি দাবানল,লাভা,জাহান্নামের অগ্নি থেকেও তপ্ত!
আমি আজরাঈলের মরণ থাবা,মৃত্যু ভীষণ ঘন্টা!
আমি দুর্যোগ!আমি দুর্ভোগ! আমি উৎকণ্ঠা!
আমি লোলিত পৃথিবীর মহাকম্পন,লোকাতিত বিপ্লব!
আমি বিভ্রাট,বিপর্যয় ,মহাপ্রলয়ের তান্ডব!
আমি মানিনা জালিমের শাসন-শোষণ,নিয়ম-কানুন প্রথা,
আমি দুঃখী মানবের হাহাকার ক্রন্দন,বিরহ মর্ম ব্যথা!
আমি জালিমের যত নিয়ম ভাঙিয়া করে দেই লন্ডভন্ড ,
আমি দুরন্ত দুর্জয়,দুর্মদ,দুঃশাসন বিরোধী দন্ড!
আমি শোকার্ত হৃদয়ের মর্সিয়া গীতি,আঁধারের উদ্ভাস!
আমি তান্ত্রিকেরই তন্ত্র-মন্ত্র!যত কুকৃর্তি করিব নাশ।
আমি ভগ্নাবশেষ ভেদ করিয়া উঠে আসা মহাবীর!
আমি তরুণ জয়ের মশাল জ্বালিয়ে উর্দ্ধে তুলিব শীর।
আমি অন্যায় দেখে অগ্নিশর্মা,দীপ্ত সেকান্দার!
আমি আঁধার পথের উগ্রকর্মা ,কিরণ কর্ণধার!
আমি প্লাবন,টাইফুন,সাইমুম ঝড়,প্রলয়ঙ্কর ঘূর্ণি!
আমি লস্কর লড়াকু!জিঞ্জির ছিড়ে পিঞ্জর যাই চূর্ণী।
আমি অমানিশা রাত,ঘোর অন্ধকার, কালবৈশাখী ঝড়!
আমি মানব হৃদয়ের স্পন্দন! আমি ভূত প্রেতাত্মার ডর!
আমি অনাচার বিরোধী মহা-সংগ্রাম!আমি কালবেলা কালানল!
আমি মহা-সমুদ্রের মাতাল বায়ু!কভু ফুৎকার দিলে নিভে যাবে দাবানল।
আমি লঙ্কাকান্ড ,মহাধ্বংস,অ্যাটম বিস্ফোরক!
আমি দ্যুলোক নাচাই,ভূলোক কাঁপাই,অন্তর বিদারক!
আমি ফুৎকারে ছাড়ি ধূমিত অগ্নি,দগ্ধ পোড়া নিঃশ্বাস,
আমি বিজয়ের হাসি,বিজয়ের গান,বিজয় বিষাণে উচ্ছাস!
আমি শাণিত শমসের হস্তে ধরিয়া কাটাই শর্বরী,
আমি জড়ত্বজয়ী সদা জাগরূক অতন্দ্র প্রহরী!
আমি শীর নত করি বিধাতার তরে,তাহারে ব্যতীত নয়,
আমি দুর্বার!আমি দুর্বার!আমি দুর্বার দুর্জয়!
আমি হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালা সুকণ্ঠ-সুমধুর!
আমি মুক্ত বিহঙ্গ! যাই দূর থেকে বহুদূর।
আমি গান গাই প্রাণ খুলে মনে যখন যা আসে,
আমি মুক্ত মনে লিখি কল্পনায় যা ভাসে।
আমি ভ্রমরের গুঞ্জরণে সুরভিত গুলশান!
আমি ছড়িয়ে দেই প্রেম পৃথিবীতে অফুরান!
আমি বিজলির গতিতে দুর্গম পথ চলি,
আমি ধ্যানী! জ্ঞানীদের কথা বলি।
আমি প্রভাতে জাগ্রত পাখিদের গান শুনি,
আমি বিক্রম, বজ্রকণ্ঠ, বিস্মিত ধ্বনি!
আমি শিশুর আশা,মায়ের ভাষা,সবার মুখের হাসি!
আমি জ্যোৎস্না রাতের আলোক জ্বালা পূর্ণিমার ঐ শশী!
আমি পূর্বাশার জেগে উঠা ঝলসানো সবিতা!
আমি নজরুলের মর্মে জাগা বিদ্রোহী কবিতা!
আমি ফেরদৌসীর মহাকাব্য শাহনামার ভাবনা!
আমি একটি কাব্য লিখিবার তরে হাজার রাত্রি জাগনা।
আমি হাঁটি ভাই কাঁপিয়ে ভূমি,যাই বিশ্বমাতৃ চরণ চুমি,
আমি মর্মী চর্মী,শান্তি ধর্মী!আমি কবি চির-নির্ঘুমী!
আমি তাহাদের তরে করি বিপ্লব,বসুধায় যারা রহিয়াছে ভুখা,
আমি তপ্ত বারুদ বহ্নি-শিখা!লেখি তাই অগ্নি লেখা।
আমি ক্লান্তিহীন কান্ডারী হয়ে দেখায়ে নিশানা সবে,
আমি চলিতে চাই তাহাদের নিয়ে,দুর্বল যাহারা ভবে।
আমি জীর্ণ প্রাণে শক্তি যোগাই,দেখাই উন্নয়নের কুঞ্জি'টা,
আমি কঠিন হাতের শ্রমিক!আমি কামার হাতের দুর্পিটা!
আমি নরকাগ্নিতেও বাঁধিয়া রাখিবো হৃদয়ে প্রেমের বন্ধন,
আমি আমার প্রিয়াকে ছাড়া দেখিতে চাই না,বিধাতার গড়া নন্দন।
আমি বসুধা বক্ষে বিধাতার দেয়া দারিদ্র্যের নজরানা!
আমি দেশে দেশে ঘুরে-দিনহীন তরে উদ্দাম উন্মনা!
আমি অশান্ত মুসাফের মানবের তরে হতে যদি পারি নিঃস্ব,
আমি পাতালপুরীর মাতাল ছেলে!বেতাল হইয়া ঘুরিয়া দেখিবো বিশ্ব।
আমি মৃত্যুর সুধা পান করিব,করিয়া মৃত্যুর তল্লাশ,
আমি হাসি দিয়া ছাড়িবো ধরণি,আমি মৃত্যুর নাভিশ্বাস!
আমি সকলের সুখে ছাড়ি আপন কক্ষ নীড়,
আমি শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিদ্রোহী,বিদ্রোহী রণবীর!