তুমি কবি, জাগো বাংলার বুকে
আবারও বিদ্রোহ করো অন্যায় রুখে।

হে নজরুল! তুমি যে প্রিয় কবি
তুমি যে মোদের বিদ্রোহের ছবি।

বিদ্রোহের চেতনা তুলেছিলে যে তুমি
তোলপাড় হয়েছিল এই বিশ্বভূমি।

হে নায়ক! তুমি মোদের প্রতিবাদী নায়ক
তোমারই পদ্যভাষায় বিস্মিত কতলোক।

তুমি যে দিয়েছিলে সমতার বিধান
মোরা মনে করি, এটি উৎকৃষ্ট দান।

হে সাম্যবাদী! তুমি যে অমর
তোমার তরে মিলিত হয়েছে নারী আর নর।

নারী আর পুরুষের সমান অধিকার
এর চেয়েও বেশি ভাল আছে কি আর?

হে সর্বহারার কবি! তুমি যে বাঁধন হারা
তোমার প্রেম-দ্রোহ, বিশ্বের বুকে ফেলছে সাড়া।

মানুষের অত্যাচারে— তুমিই চিরব্যথিত
সোচ্চার তুমি— তোমার কন্ঠ বিশ্বে করেছে হিত।

হে সৈনিক! তোমার তরেই যুদ্ধ—
হানাহানি আর তুলকালাম, হয়েছে সব বদ্ধ।

পিছপা তুমি হও নি হেথায়
লাখে লাখেই মরলো মানুষ, ঝাপিয়েছে মরণ যেথায়।

হে ছন্নছাড়া! প্রেম সব তোমার তরে
কত দিয়েছো মোদেরে— পিঞ্জিরা ভরে।

কবিগানে বানিয়েছো সেরা ভাবের তাল
কত গানে ছড়িয়ে আছে, কতো গেছে কাল।

হে চঞ্চল কবি! তোমার ভাবেই কি অশেষ!
ভাবুক তুমি, ভাবুক গড়ো— গড়ছো গোটা দেশ।

জীবনের পথে হেঁটে, ভাবনা গেয়ে যাওয়া
টুকরো-ছেড়া ছন্দে, পুষ্প-ঝড়া গন্ধে, তোমায় খুঁজে পাওয়া।

হে উন্মাদ! উন্মাদনায় যে মেতে বেড়াও
অকূল নদীর উল্টো পথে, স্বেচ্ছায় নৌকা বাও।

নিপীড়নের যন্ত্রণা নির্মূল করেছো বটে
আপন তরী বাইয়া গেছো, ফিরিয়েছো প্রাণের তটে।

হে সাহসী! দুর্বার–ঝঙ্কার তুমি
তোমারই তেজী হাতে, গড়ে উঠল সভ্যভূমি।

গড়েছো তুমি কোন সে প্রথা
দুর্বলেরা হয়েছে মুক্ত, শোষকেরা নত–মাথা।

হে দরিদ্র! সম্মান তোমার পদ–স্পর্শে
তোমার চির-জীবন-কায়ায়, সাম্যের মেঘ বর্ষে।

ধর্মচিন্তায় এনে দিলে, সমতার লেখনী নিয়ে
মানুষের অন্ধত্ব যে, গেছে কবে ক্ষয়ে।

হে প্রমিক! কাব্যে-গীতে-কণ্ঠে কেবল যে মধু
যাই খুঁজে চলি, প্রেম-পূর্ণতা খুঁজে পেয়েছি শুধু।

বুকের মাঝে প্রেমের কী যে বাস!
আজীবন ব্যথাময় প্রেমের রূপ! বড়ই দীর্ঘশ্বাস।

হে বুলবুল! ভালোবেসে বাঁধিয়েছো গান
অন্তরে মোর মায়া জাগে, এ যে চির দান।

তোমার গানের সেই চাতকেরে খুঁজি
মানুষেরে ভালোবেসেই পেয়ে যাই বুঝি!

হে কথক! তোমার কথার কী সে প্রলাপ
জীবন ধরে চর্চা করি, পাই যে শতো মাপ।

দিয়েছো বাঁকা-বাঁশের বাশরী, দিয়েছো রণতূর্য
বিদ্রোহ আজ ভাঙছে-চুরছে, অকথ্য সব ধৈর্য।

হে নজরুল! সালাম জানাই হাজার বার
জাতীয় কবি যে তুমি, আজকের জনতার।