চনা কালঃ ১৭-১২-১৯৮৯।
সন্ধ্যার একটু আগে স্ত্রীকে বললাম,
ছোট মেয়েকে নিয়ে একটু বেড়িয়ে আসি।
মেয়েটা প্রথমে সন্মতি জানিয়ে
পরক্ষণেই কি ভেবে বেঁকে বসলো
এবং বললো; আমি যাবনা।
কারণ ওর মনে সন্দেহ ছিল -
যদি ওকে আর এ বাসায় না আনি,
তাহলে ওর আপা এবং ভাইয়াদের দেখতে পাবেনা,
এবং সেই সাথে একটা ছোট্ট মোরগের বাচ্চা
যেটা ওর অত্যন্ত প্রিয়,
এ ছাড়া ওর আরও কিছু খেলার সরঞ্জাম।
অবশ্যই ফিরে আসবো বলে কথা দেয়ায়
ও আশ্বস্ত হলো।
মনে মনে ভাবলাম –
মেয়েটা যে বাড়িটাকে নিজের বাড়ি বলে
ভুল করে বসে আছে,
আসলে ওটাতো সরকারি বাড়ি।
পাঁচ বছরের ছোট্ট একরত্তি মেয়ে বাড়ির জন্য ভাবে
অথচ আমি চল্লিশের কোঠায় পা রেখেও
বাড়ি করতে পারিনি
কি দারুণ লজ্জা এবং ব্যর্থতা!
সামর্থ্যানুযায়ী অনেকেই কষ্টার্জিত অর্থের বিনিময়ে
বাড়ি তৈরী করে নিশিন্তে বসবাস করে
এবং নিজ বাড়ির কথা ভেবে শান্তির ছোঁয়া পায়।
আমার কিন্তু মনে হয় –
যে বাড়ি থেকে একে একে
সবাইকেই সরে যেতে হবে একদিন;
কি করে সেটা নিজের হতে পারে,
সে হিসাব মেলাতে পারিনা একেবারেই!
অতঃপর বাড়ি বাড়ি করে
যতই আমরা বাড়াবাড়ি করি না কেন
আসলে আমরা সবাই বাড়িবিহীন
একাকী এবং ভিষণ একাকী!