(ভোর বেলা দেখা স্বপ্নকে আমরা সত্যি বলেই ভাবি, তাহলে কি এগুলোও সত্যি ঘটে? আমি মহারাজের সেই রাজকীয় স্বপ্নের কথাই তোমাদের সামনে, তুলে ধরলাম। একটু বড় কিন্তু ভুল করেও যেও পড়তে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়োনা; পরলেই বিপদ...)
গদ্য কবিতাঃ-
অনেকদিন ধরেই বায়োলজিক্যাল একটা ট্যুর করবো ভাবছি, আমার মাথার ভিতর কে যেন বলছে; যা, যা'না একটি বার ঘুরেই আয়!
নিজেরই তো দেহও, একটিবার দেখেই আয়'না, সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলো ঠিক ঠাক আছে কিনা?
অগত্যা; মাথার ডাকে সাড়া না দিয়ে আর পারলাম না।
শুরু হল আমার জীবন্ত ময়নার - 'ময়না তদন্ত'!
প্রথমেই মাথা দিয়েই শুরু করলাম...
ওরে ব্বাস! একি, এখানে এতো গুলো জীবাণু চুলের কোষে বাসা বেঁধেছে?!
ওহহহ! তাই কলির সকালেই চুল গুলো এতো পেকে যাচ্ছে? পড়ে যাচ্ছে?
মাথাটা বেশ গরম হয়ে গেলো; 'দাঁড়া তোদের ব্যাবস্থা করছি'।
যেইনা, ধীরে ধীরে মাথা থেকে গলার গলি ধরে হাঁটতে হাঁটতে বুকে পৌঁছেছি, হঠাৎ দেখি প্লুরার ঝিল্লি ধরে কিছু উঠতি বয়েসি জীবাণু খুব হৈচৈ করে ঝিল্লির জালে দোল খাচ্ছে।
দেখে মাথাটা এতোটাই গরম হয়ে গেল যে, একটা চাং-পটকা জীবাণুকে কষে একটা চড় লাগালাম। ততক্ষণে অন্যরা ভয়ে পিছিয়ে গেছে।
আমি বল্লাম ওহো; তোমারাই তাহলে আমায় যখন তখন কাশিয়ে প্রাণ বের দাও? দাঁরাও তোমাদের দোল খাওয়াচ্ছি!
এই ঘটনার পর মাথা দিয়ে রাগে প্রায় ধোঁয়া বেরুতে থাকলো, আরও কোথাও না দাড়িয়ে সোজা পাড়ি দিলাম দেহের রান্নাঘর কাম টয়লেটের দিকেই।
অনেক হয়েছে আর নয়; এবার থেকে দেহ-রাজ্যর হিসাব আমাকেই রাখতে হবে?!
পেটে এসেই দেখি, ছোট বড় কত রকমের যন্ত্র চলছে, উফফ, তার কি বিকট আওয়াজ কানপাতাই দায়!
দূরে এক কোণে কিছু ব্যাক্টিরিয়া ধোপদুরস্ত জামা প্যান্ট পড়ে খুব মন দিয়ে কি যেন করছে।
এখানে ব্যাক্টিরিয়া? মাথা তো তেতেই ছিল, তারপর একসঙ্গে এতগুলো ব্যাক্টিরিয়া!
নাহ! আর নয়, এবার এঁদের ঘাট শ্রাদ্ধ করে গোটা দেহ রাজ্যকে জীবাণু মুক্ত করে সুরক্ষিত করতেই হবে!
ব্যাগ থেকে যেই না কিছু এন্টকুইনাল, ক্যাল্পল, আর স্যারিডনের বিষাক্ত বড়ি বের করে ছড়িয়ে দিতে যাবো...? অমনি কোত্থেকে দুদ্দাড় করে ছুটে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরে; সেকি কান্না... আর বলছে 'পিলিজ আমাকে মারবেন না?' আমি নতুন বিয়ে করেছি, আমার ছ ছ টা ছেলে মেয়ে আছে; তাঁদের আবার বউ আছে, তাঁদের আবার নিষ্পাপ ফুলের মতন ফুটফুটে দু দু টো ছেলে মেয়ে আছে। তাঁদের আবার...
ই থাম!
দোহাই মহারাজ!*
আমার ডান হাতের মুষ্টিতে তখন ধরা বিষাক্ত অব্যর্থ সব অস্ত্র...(এন্টকুইনাল, ক্যাল্পল, স্যারিডন...)
- ১ পিস করে ছাড়লেই পুরো ঝাড় বংশ লোপাট হয়ে যাবে।
তবু একটা কথা আমার মনে এখন কিন্তু বড্ড উঁকি দিচ্ছে; আগের জীবাণু গুলো সবাই তো কম বেশী হিংস্র ছিল, এরা'তো তেমন নয়???
শান্ত চিত্তে, তার মাথায় হাত রেখে বল্লাম, তুমি কে?
ততক্ষণে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে প্যান্টে সে ইয়ে করে ফেলেছে! আবার অভয়ের সুরে বল্লাম, তোমার কোন ভয় নেই বোলো তুমি কে?
করজোড়ে ব্যাক্টিরিয়া বল্ল মহারাজ আমি ফ্লোরা ব্যাক্টিরিয়া... ভালো ব্যাক্টিরিয়া গো; খুউউব ভালো ব্যাক্টিরিয়া! তোমার শরীরে সেই কত্ত দিন থেকে আমি আমার দাদু, তার দাদু... থাম!
ভালো ব্যাক্টিরিয়া? হ্যাঁ গো হ্যাঁ, আমরা তোমার দেহে বাইরে থেকে আসা দুষ্টু ক্ষতিকারক জীবাণুদের সাথে যুদ্ধু করে তোমার দেহকে সুস্থ আর সুন্দর রাখি।
এই দেখনা; কদিন আগে আমার বড় ছেলে এক খতরনাক টাইফয়েড জীবাণুর সাথে যুদ্ধু করতে গিয়ে মারা গেলো!
শুনে মনটা সত্যি দুঃখে ভরে গেলো, আমি নাকি একেই, ছিঃ!
নিজেকেই বেশ অপরাধী অপরাধী লাগছে, ফ্লোরা ব্যাক্টিরিয়া যেই না ধন্যবাদ জানাতে যাবো,
হঠাৎ?
প্রভাত সংকীর্তনের ভাইটাল ডোজে; কেলেঙ্কারির ভাইপো হল,
ঘুমটাই ভেঙ্গে গেলো... যাহ্!!!