নিশুতিরাতের বুকে তুষারপাত হয়,
চারিদিকে রুক্ষপ্রান্তর হিম শীতল ঠান্ডায়,
একটু পরেই আমার গন্তব্য দূর অজানায়।
যে টুকু সময় হাতে আছে লিখতে বসেছি,
এটাই শেষ কথোপকথন।
চিঠিটা যখন তোমার হাতে পৌছবে,তার আগেই
আমি না ফেরার দেশে চলে যাব।
মাগো,তুমিও আগেই খবর পাবে,
রেডিও টিভি থেকে শুরু করে, সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, আমাদের খবর ছড়িয়ে পড়বে।
মা, তোমার মনে আছে,
আমায় বলেছিলে,যদি কোনদিন আমার দেশে
বর্গী হানা দেয়,
আমি যেন দেশ মাতৃকার টানে,
নিজেকে সঁপে দেই।
আমি তোমায় কথা দিয়েছিলাম,
তাই সৈনিকের ট্রেনিং শেষ করে
যেদিন বাড়ি ফিরেছিলাম,
তুমি আমায় বুকে জড়িয়ে নিলে
আদর সোহাগে আমায় ভরিয়ে দিলে।
মা,আজ আমার দেশের আকাশে শকুন উড়ে বেড়ায়
মানুষখেকো হায়নাগুলি লাশ চায়।
হাজার কোটি ডলার খরচ করে মানবরুপী দানবরা
মারণাস্ত্র বানায়।
সেই অস্ত্রে রক্ত নিয়ে মত্ত ওরা পৈশাচিক ক্রীড়ায়।
চোখের সামনে দেখেছি,ওদের হত্যাযজ্ঞে,
নিরপরাধ মানুষ রক্তে ভেজা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
আবার ওরাই প্রেস মিট করে,
এই ধ্বংসমিশন নাকি শান্তির তরে।
শান্তির নামে অশান্তির বীজ দেশে দেশে
রোপণ করে যায়।
স্রোতস্বিনী রক্তের নদী বয়ে যায়।
শরণার্থী শিবির গুলিতে মানুষ মরছে
ক্ষুধার তাড়নায়।
রক্তাক্ত ক্ষত পায়ের লালপথে আরব আজ রক্তময়।
রক্ত ছড়িয়ে পড়ছে এবার ইউরোপময়।
বসে থাকার আর সময় নেই,
তাই রক্ত দিয়ে লিখেছি শপথ আমরা মুক্তি সেনানী।
সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসনে ক্ষমতার লালসায়
ওরা দিশেহারা।
মুক্তিকামী জনতা আমরা,
আজি উদ্দাম ভয়হারা।
শুন্যহাতে মানুষ ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের আশায়।
চারিদিকে বারুদের ঝাঁঝালো গন্ধ, বোমায়
বসত পুড়ে ছাই।
দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল
সৎকারের উপায় নাই।
যুদ্ধাস্ত্র সহ সারি সারি সাজোয়া কনভয় আসছে ছুটে।
সময় নেই হাতে,
হাজারো সৈনিক ভাই রয়েছে আমার সাথে।
বুকে মাইন বেঁধে শুয়ে যাব রাস্তায়,
একদিন বসন্ত আসবে পাইনের শাখায় শাখায়,
ফুলে ফুলে ছেয়ে যাবে শহরময়।
এদেশের সোঁদামাটির গন্ধে খুঁজে নিও আমায়,
ভাল থেক মা,বিদায়।