আমি এক শরণার্থী বালক,
তোমাদের মত সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসনে
আমি হারিয়েছি আমার শহর জনপদ।
তোমরা তো শাসক নও, হিংস্র শাপদ।
অকস্মাৎ একদিন হত্যাযঞ্জ চালালে আমার শহরে
এক রাত্রির মধ্যে সব মানুষ মারা গেল।
পাহাড়ের গুহায় আমার আশ্রয় জুটল।
এক সময় থেমে গেল বোমার আওয়াজ,
বুঝলাম,মিটে গেছে আজকের মত তোমাদের
রক্তের স্বাদ।
মাৎস্যন্যায়ের মত দেশ থেকে দেশান্তরে
তাড়িয়ে দাও।
আমাদের লাশের উপর দাঁড়িয়ে তোমাদের
ক্ষমতার দম্ভ দেখাও।
আফগান কাশ্মীর আরাকান সিরিয়া
ইরাক ইয়েমেন ফিলিস্তিন লিবিয়া।
নিপীড়িত মানুষের আর্তনাদ ইথারে আসে ভেসে।
স্বর্গের মত দেশগুলি নরক হয়ে গেছে।
বোমায় বিদীর্ণ পটভূমি এখন সিরিয়া,
নিথর দেহের শিশুটি আরশের পানে চায়
সৃষ্টিকর্তার কাছে নিরবে নালিশ জানায়।
তোমাদের মত জল্লাদের তান্ডবে আমার দেশ আজ বিরান।
চারিদিকে গলিত লাশের স্তুুপ, নেই কোন
প্রাণের স্পন্দন।
লালসা আর ক্ষমতার রোষানলে আমি উদ্বাস্ত।
তোমাদের পাশবিকতায় আমার বোন ধর্ষিত।
নিরবে চেয়ে দেখেছি, তোমাদের উম্মত্ত ত্রাস
আর হিংস্র উল্লাস।
আমাদেরও ছিল আপেল আর আঙ্গুরের বাগান।
বাবা,মা,ভাই,বোন সহ বাড়িটি আমাদের
বেশ আলিশান।
সারি সারি খেজুর গাছ,
জীবনে কত আনন্দ, কত উচ্ছাস।
সব হারিয়ে নিঃস্ব রিক্ত হাতে
আমার স্থান এখন শরণার্থী শিবিরে।
জেরুজালেমের বাতাসে ফিলিস্তিন শিশুর
কান্না শোনা যায়।
আরব পরিনত হয়েছে কসাইখানায়।
বাস্তুচ্যুত হয়ে আজ বাস করি তাবুতে,
পুরো পৃথিবী ঘুমিয়ে থাকে রাত্রিতে।
আমরা জেগে থাকি,পেটে অনেক ক্ষুধা থাকে।
বিশ্ব নিরবে তাকিয়ে রয়,
রক্তাক্ত রোহিঙ্গার ক্রন্দসী হৃদয়।
নরপিশাচ জান্তাশাসক মুছে দিতে চায়,
রোহিঙ্গার আত্মপরিচয়।
হায়নাদের থাবা এখন ইউরোপের দরজায়।
নির্বাক শান্তি কমিশন, বিশ্ব মানবতা
কেঁদে বেড়ায়।
বেদনার সুরের মুর্ছনায়, পৃথিবী আজ বিষাদময়।
লাশের চিত্রশালা এখন পৃথিবীর ক্যানভাস।
সাম্রাজ্যবাদী তপ্লিবাহক, ক্রুর রাষ্টসমাজ,
তোমাদের কত লাশের দরকার?
আর কত রক্ত পেলে মিটবে তোমাদের
রক্তপিপাসার হাহাকার?