খোদার আদেশ অব্যর্থ মানিয়া,
দ্বীনের প্রতি সম্মান আনিয়া;
করিয়াছিল যে পণ,খোদার তরে উত্সর্গ করিবে:
আপন প্রিয় ধন।হেথা চায়,ওথা চায়,
খুঁজিয়া খুঁজিয়া রাত কাটায়।
কোথায় সে প্রিয় ধন?
ক্লান্ত আঁখি,
ব্যাকুল মন।
কি করে পূর্ণ করিবে
খোদার তরে করেছিল যে পণ।
মা হাজেরা চিন্তা মগ্ন:
পতি ইব্রাহিম বিমর্ষ বিবর্ণ,
কেমন করিয়া লঘিবে তাহার হ্নদয়ে ব্যথার পুঞ্জ পাহাড়?
দিন মান কাটিয়া যায়,
অনিদ্রা অবহেলায়।
অবশেষে এক রাত্রি নিশিথে,
ইব্রাহিম পাইলো এ জগতে,
ইসমাইল ছাড়া নেই তো কোন ধন!
হায় হায় করিয়া ওঠে পিতার অবুঝ মন।
স্নেহকে পর করিয়া,
কর্তব্যকে আপন সাধিয়া:
হাজেরার কাছে নিবেদন করিল প্রভাতে যেন আতর জলে,
ইসমাইলরে গড়িয়া তোলে।
অবুঝ ইসমাইল পিতারে সুধায়,
যাইবো পিতা কোন জায়গায়?
পিতা কহেন পুত্র আমার,
দ্বীনের পরে যাত্রা তোমার।
কোমল শিশুর অবুঝ মন,
অশান্ত সে চিরক্ষন,
প্রভাতে উঠিয়া ক্রস্ত হস্তে,
সাজাইয়া লইলো নিজেরে বস্ত্রে।
মা হাজেরার তণু মন,
কিসের সংকেত বিচলন?
পতির মুখের পানে চাহিয়া নিরব রইলো না জানিয়া।
যাত্রা তাদের হইলো শুরু,
গন্তব্যে পৌঁছাইলে পিতা কহেন,
পুত্র আমার খোদার তরে জীবন তোমার,
করিবো উত্সর্গ এখন।
পুত্র কহিল,অকুন্ঠ চিত্তে খোদার আদেশ তীরধার্য সারাক্ষণ।পিতা বাঁধিলেন পুত্রের হাত,
চোখের পরে বস্ত্রের পাত।
শেষ চুম্বন করিয়া লইলেন,
স্নেহ ভরে মাটিতে শোয়াইলেন।
কম্পিত হস্তে খঞ্জর খানি,
কর্তব্যের পর অবিচল মন মানি চোখের পাতা এক করিয়া
খোদার কথা স্মরণ করিয়া চালাইলেন খঞ্জর!
ফিনকি দিয়া রক্ত ছুটিল,
আর্তনাদে মাটিতে লুটিইল,
চোখ খুলিয়া একি দেখিলেন!
পুত্র ইসমাইল হাসিতেছে অদূরে।
কুরবানী হয়েছে অবুঝ দুম্বাখানি।
হে খোদা তুমি মহান অসীম।ইসমাইলরে বাঁচাইয়া ইব্রাহিমরে করেছ,
কর্তব্যের পরে চির অমলিন।