আমি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে পারি
প্রিয়সীর ছলনাকে মেনে নিতে পারি
স্বজন হারানোর ব্যথা সইতে পারি,
শারীরিক কষ্ট লাঘব করতে পারি
মানসিক চাপ সহ্য করতে পারি
মরণব্যাধি ক্যানসারে মরতে পারি।
রক্তপিপাসু সমাজের বলী হতে পারি
সকল শোষণ-নির্যাতন সইতে পারি।
দারিদ্রতার অভিশাপ মেনে নিতে পারি
ভিখারি হয়ে দ্বীনহীনভাবে বাঁচতে পারি,
সবকিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হতে পারি।

সবর্শান্ত হয়ে বাঁচতে পারি, কিন্তু-
বিভীষিকাময় একাকীত্ব সইতে পারি না।
আমার নির্লিপ্ত দৃষ্টিপানে তাকিয়ে দেখো-
অন্তরের নিঃসঙ্গতার নিনাদ শুনতে পাবে।
আমার কৃত্রিম হাসিমাখা মুখখানি দেখে -
ভাবছো, আমি সুখে-শান্তিতে বেশ আছি!
আরে না, এটা তোমার ভ্রান্ত ধারণা
এ হাসি জীবনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার
নিসঙ্গতাকে সহ্য করার কৌশল মাত্র।

একটা সময় প্রকৃতির অমুক নিয়মে-
সাগরের উত্তাল ঢেউ শান্ত হয়,
আকাশের কালো মেঘ বিলীন হয়,
বাতাসের তান্ডব নৃত্য শেষ হয়,
দিনের পর রাত আসে-
রাতের আঁধার কেটে ভোর হয়,
মানুষের সাথে মানুষের দ্বন্দ্বের অবসান হয়,
ঝগড়া বিভেদ মিটে যায়
পুরাতন সংস্কার ভেঙ্গে সৃষ্টি হয় নতুন মতবাদ।
একদিন সকল কিছুর বিলুপ্তি ঘটে-
ইত্যবসরে আমার জীবনে বাসা বাঁধে
নিরবঘাতক অফুরন্ত নিঃসঙ্গতা।
নিঃসঙ্গতা আবেশী চৌম্বক পদার্থের মতো,
যতই নিঃসঙ্গতা থেকে মুক্তি চাই
ততোই মন্ত্রের মত ফাঁদে পড়ে যাই।
চোরাবালির অতল গভীরে তলিয়ে যাই
মরিচীকার ভেবে নিঃসঙ্গতায় ডুবে যাই।

আমি নিঃসঙ্গ থাকতে চাই না-
ভালবেসে তোমার সঙ্গী হতে চাই
নিঃসঙ্গতা হতে চিরতরে মুক্তি চাই।
সঙ্গিন জীবনে আনন্দ অশ্রু ঝরাতে চাই,
একাকীত্বের দিনগুলো থেকে মুক্ত হতে-
আজ তোমাকে চাই, শুধু তোমাকে;
যার হাতে হাত রেখে হৃদয়ে হৃদয় রেখে-
স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারি।

আশায় থাকি, একদিন তুমি এসে বলবে-
শক্ত হও, লড়াই কর।
জীবনকে প্রাণের স্পন্দন উজ্জীবিত করো
প্রাণবন্ত হযে বাঁচার মতো বাঁচো।
এই যে আমি আছি তোমার পাশে-
মিশে আছি একান্ত আপন হয়ে,
যার আশ্বাসে বাঁচার স্বপ্ন দেখা যায়
যার জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা যায়
অজানার উদ্দেশ্যে, পথ চলা যায়।
যার সুখে হৃদয়ে সুখ জাগে-
যার দুঃখে মন ব্যথিত হয়ে ব্যকুল হয়,
যাকে বলতে পারি তোমাকে ভালবাসি
আমার প্রিয় নিঃসঙ্গতা থেকেও বেশি
চিরতরে নিঃসঙ্গতা থেকে চাই মুক্তি।

-----------------০-----------------
সময়ঃ ১১ঃ১১
তারিখঃ ০৭/৫/২২
স্থানঃ আনন্দ ডিজিটাল মডেল স্কুল।