-: রুবাইয়াত ই ওমর খৈয়ামের অনুবাদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ- ০২:-
-: Rubaiat of Omar Khayyam :-
Edward Fitzgerald
এর অনুবাদ :-
০২
Dreaming when Dawn's Left Hand was in the sky,
I heard a voice within the Tavern cry,
" Awake,my little ones,and fill the cup
Before Life's liquor in it's Cup be dry."
কান্তি চন্দ্র ঘোষের অনুবাদ(২)
স্বপ্নে যেন কণ্ঠ শুনি- রাত্রি জানি শেষ প্রহর-
পানশালে মোর দৈববাণী- করণেতে কার বাজল স্বর!
বলছে হেঁকে- ওঠরে বাছা,ভরয়ে নে তোর পেয়ালাটুক,
জীবন- সুরা শুকিয়ে না যায়,আপশোসে ফের ফাটবে বুক।
নরেন্দ্র দেবের অনুবাদ(২)
আজ অরুণের প্রথম ভোরে,শুনছি কোন স্বপন- ঘোরে,তৃষ্ণা- ২কাতর,কী যেন স্বর,করুণ সুরে বাজে,
ডাক দিয়ে কে বলছে এসে পান্থশালার মাঝে-
জাগো,জাগো, ওগো আমার তরুণ সখার দল, বিলম্বে কি ফল?
জীবন- সুরা শূন্য হবার আগে,পাত্রখানি নাও ভরে নাও নিবিড়
অনুরাগে।
নজরুল ইসলামের অনুবাদ(২)
আঁধার অন্তরীক্ষে বুনে যখন রূপার পাড় প্রভাত,
পাখীর বিলাপ-ধ্বনি কেন শুনি তখন অকস্মাৎ?
তারা যেন দেখতে বলে উজল প্রাতের আরশিতে-
ছন্নছাড়া তোর জীবনের কাটলো কেমন একটি রাত!
সিকান্দর আবু জাফরের অনুবাদ নম্বর-২
তখনো প্রহরী সুবেসাদেকের খোলেনি সিংহদ্বার,
তখনো ভেরের আকাশে ছড়ানো হাল্কা অন্ধকার,
উদয়শৈলে সুর্য ওঠার তখনো একটু বাকি
নিশিনিমগ্ন প্রকৃতির ঘরে তখোনো বন্ধদ্বার।
সরাই খানার দুয়ারে কে যেনো সহসা উঠিল হাঁকি:
মুসাফির শোনো দুর্লভ যত নিমেষ যেতেছে ডাকি,
সত্বর এসে ভোগের পাত্র ভরে নাও অনুরাগে;
দেহের আধারে জীবন-সুরার পিপাসা থাকতে বাকি।।
অধমের অনুবাদ(২)
আকাশ ভরা ভোরের আলো,স্বপ্নে বিভোর সাকি,
সরাইখানার পান্থ এক উঠলো জোরে হাঁকি;
উঠো সাকি,শরাব বিলাও, পেয়ালা পূর্ণ করো,
জীবনমদিরা পান করে নেই,তলানি রয়েছে বাকি।
সোহাগ রেজভীর অনুবাদ(২)
স্বপন দেখেই কাটালে রাত,জাগো এবার দেখো প্রভাতআলো, পানশালাতে কাঁদছে কেহ,শান্ত করবে এবার চলো।
ফুরিয়ে যাচ্ছে আয়ুবেলা,পেয়ালা ভরে দাওগো সুরা;
ফুরিয়ে যাবার আগেই যৌবন,পূরণ করি ইচ্ছেগুলো।
Md Anwarul Islam এর অনুবাদ(২)
আকাশ গঙ্গায় স্বপ্ন রাঙায়, আমার চোখের বাম তারায়,
হঠাৎ কানে মলয় তানে, শুনলাম কেউ কান্নার ধারায়।
জীবন সুধার ছোট্ট বাটি, আস্তে আস্তে যাচ্ছে ঘাটি;
তলানিটাও খেয়ে নাও, সুধার স্রোত ঐ শুকায়
Abulkalam Azadএর অনুবাদ:-(২)
আঁধার দূরে পালিয়ে গেছে , তবুও কেন ঘুমের ঘোর !
মিথ্যে স্বপন যাক ছুটে যাক, হাতছানি দেয় নতুন ভোর ।
বুলবুলিদের বিলাপগাঁথায় গুলবাগের সব ফুল কাঁদুক ;
স্নিগ্ধ আলোর পরশ পাবে রাখলে খোলা মনের দোর ।
Jahangir Kabir এর অনুবাদ-(২)
রাতের স্বপন যায় যে টুটে সূর্য যবে আকাশপটে,
দিগ্বিদিকের চিৎকারে এক পান্হশালা জেগে উঠে।
বলছে তারে উঠ বাছা পেয়ালা তোমার পূর্ণ কর ;
ফুরিয়ে গেলে জীবনসুধা মিলবে কি আর ঐ ঠোঁটে।
এ্যাঞ্জেল আইচের অনুবাদ নম্বর-২
রাত কাটালে অলীক স্বপ্নে,প্রভাত আলো ডাকে শোনো,
দ্বারের পাড়ে করুণ সুরে,প্রেমিক তোমার কাঁদছে কোনো।
সময় বেশি নাই বাকি,এই কথাটাই বলছে আজ;
তার সাথে মিলিত হও,একটু সুখের জাল বোনো।
নূরনবী হীরার অনুবাদ নম্বর -২
ঊষার আলো ফুটবে যখন স্বপ্নে এসে জাল বুনে,
কী জানি কে যায়? ডেকে যায় কর্ণ মধুর তাল শুনে।
কেতন শুনে চেতন হতে পূর্ণ করতে পেয়ালাটুক;
আসলে বাধা জীবনসুধা পান করে নাও কাল গুনে।
জুবায়ের হাসান জাহিদের অনুবাদ-২
রাত্রিশেষে পুবাকাশে দেখা দিলো আলোর প্রাচীর,
কানে আসে অতর্কিত প্রভাতপাখির কিচিরমিচির।
সাকি ডাকছি তোমায় নাম ধরে, শূন্য পেয়ালা দাও ভরে;
নেশার টানে একটুখানি শরাবপানে দিল করি স্থির।
খলিলুর রহমানের অনুবাদ - ২
চলছে স্বপন - দূরে যখন গগন ছেড়ে আঁধার পালায়
যায় বলে সে, ওঠরে জেগে জীবনের এই মদ্যশালায়।
জীবন-মদের গেলাসখানা দুদিন পরেই শূন্য হবে
যেটুক পারিস ভোগের মদির তার আগে ঢাল বুকের জ্বালায়।
জাহিদ হোসেন রনজু'র অনুবাদ-২
আসি আসি করছে ধরায় নতুন রবির নতুন ভোর
হালকা হয়ে আসছে যখন স্বপ্নমাখা ঘুমের ঘোর
কে যেন ঐ উঠলো ডেকে-'উঠ্ রে জেগে। চোখটি খোল
শুষ্ক হওয়ার আগেই সুধায় নে ভরে নে পাত্র তোর।'
-------------------------------------------
২০ এপ্রিল ২০১৯, বয়রা, খুলনা
রচনাকাল:-
ঢাকা১৭/০৭/১৮
রাত ৮-৪০