করোনা কাল
বাতাসে ঐশী
তুমি কি আগের মতো আছো? সেই যে কবে দেখা,
মনে হয় যোজন যোজন দুর! কষ্টকর স্পর্শহীন জীবন।
অকস্মাৎ কেমনে পৃথিবীর রং বদলে গেলো
চার দেয়ালে কি যে বিভীষিকায় দিন কাটছে
আয়নায় দেখাদেখি দু-চরণে স্বল্প পরিসরে পায়চারি !
ভাবি এ যেন এক অচেনা পৃথিবী
এ পৃথিবী আমার নয় এ যে শ্বাসরুদ্ধ মৃত্যুপুরী ।
উড়ন্ত পাখিদের ঝাঁক দেখে
ইচ্ছা হয় তাদের মত ঊর্ধ্ব আকাশে উড়ি!
ওদের আকাশ আজ বড়ই স্বচ্ছ! ওরা কোলাহলে মুগ্ধ।
দুর্যোগের মুখোমুখি আজ সমস্ত মানবকুল
করোনা ভাইরাস অদৃশ্য জীবননাশী থাবায় সামাজিকতা দুর্বিষহ।
কি যে মানবিক বিপর্যয়!কি বিস্ময় !
কাছের মানুষ গুলো মনে হয় ভাইরাস বাহী।
আজ নিজেকে কেমন যেন অপরাধী লাগছে ? জানি না কি জন্য।
সভ্যতার এমন ঊষা লগ্নে এই ক্রান্তি কাল!
এমন দুর্দশায় কাকে দায়ী করি? বিলাসিতা? বিজ্ঞানীদের অলসতা
না হয় টাকার অংকে ঘাটতি!
জ্ঞানীদেরও যে একটা অভাব আছে সেটা আজ বুঝা গেলো।
বিশ্ব আজ অতি ধনিদের দখলে!
রিসার্চের জন্য ইমার্জেন্সি করে অর্থ বরাদ্দ আনতে হয়! কি আশ্চর্য!
আধিপত্যবাদিদের রাসায়নিক বিস্ফোরণের খরচের তুলনায়
মানুষের জীবন কত তুচ্ছ!
ধী-ক্ষার সাম্রাজ্যবাদের
কবে তারা লোটে নিয়েছে সম্পদ আজ আমাদের এনভ্যরমেন্ট
জ্ঞ্যানীরাও তাদের দখলে ।
লোভীদের রাজত্ব সর্বত্র , সেই যে
আদি যুগের অভ্যাস ! নিপাত হোক সাম্রাজ্য বাদ।
তবে যাই বলো স-নির্ভরশীলতা চাই, শরীর চর্চা চাই, ভেষজ খাবার চাই
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে , বাচার যে অদম্য ইচ্ছা।
তবে সাবধানীরা বেচে যায়
সেটাও সত্য।
এইতো সে দিনের কথা, রাত ছিল ক্ষীণ, দিন ছিল দীর্ঘ
কোলাহলে দিন কাটতো আজ তার উল্টো।
কি যে অসহ্য বেদনা
মুখে গজিয়েছে চুল, তোমার কি? আবরণ?
তবে যারা যোদ্ধা তারা "করোনা" যুদ্ধ করেই যাচ্ছে নীরবে ,স্বার্থ হীন
সাঁওতালি মেয়েদের মত!
ওদের জীবনের মূল্যই বা কি? গুণতে গিয়ে যে হিসাব নিরামিষ
আমাদের যে বিবেক শূন্য।
যারা হারলো,তারা ছেড়েই গেলো! তাদের স্মৃতি
কফিনে আবদ্ধ! কিন্তু যার গেলো
সেতো বেচেও মরে থাকলো!
আর যে গেলো, সে যে মরে বেচে গেলো! আহা কি বৃথা জীবন!
প্রিয় জনকে ছুঁয়েও বিদায় দিতে পারলো না!
এ সব স্মৃতি চারণে চোখে জল ছোটে। আর পারিনা।
মনে হচ্ছে যতক্ষণ করোনা ভাইরাস বিজ্ঞানীদের ল্যাবে
আমাদের মুক্তি নেই। ইতি ।আজ এই-ই।
মুজাহিদ চৌধুরী। লন্ডন। ১৫।৫।২০।