জগত জুড়িয়া চক্ষু মেলিয়া
দেখিতেছি যত না জীবন,
নাহি অবলোকন চাহিয়া নয়ন
রহিয়াছে তাতে তত না মরণ!
মাটির চাড়ি মাটির হাড়ি
মাটিতেই গড়ি দালান বাড়ি
মাটিতেই চাষ মাটিতেই বসবাস,
যাতেই বাঁচি তাতেই মরি
তাতেই সর্বগ্রাস!
পানিই জীবন পানিই মরণ
পানিতেই করি জীবন ধারণ
তেষ্টা মেটে যার ই পানে
ধ্বংস আসে তারই বানে।
অনলে পাকিয়া ভজন
কোর্মা পোলাও আরও
কত নিত্য প্রয়োজন,
তাতেই হইয়া দহন
না ফেরা দেশে শুভ্র সাদা বেশে
চলেছে স্বজন আরও কত প্রিয়জন।
তারই আঁচে মন কাড়ানো ধাচে
রচিত শোভিত যত অলঙ্কার
রোপিলাম দেহটা তত অহংকার,
তারই ত্রাসে আচানক গ্রাসে
অলঙ্কারিত অঙ্গখানি হয় যে অঙ্গার।
বিদ্যুৎ ব্যবহারে জীবন
যাপনে করছি বিলাশ,
তাতেই পিষ্ট হয়ে সর্বনাশ
পড়ে থাকে হয়ে যেন
নিথর এক লাশ।
কত জন’রে দেখিলাম
ইন্নালিল্লাহ... পড়িলাম
কানেতে শুনিলাম, কতই না ভাবিলাম
দূর্ঘটনায় পড়ে রাস্তায় রই মরে
সে যে প্রতিবেশী এক ভাই,
পৃথিবীতে আর নাই,
করিনু তাঁরে বহন করিতে দাফন
ছাড়িলাম তাঁর খাটি
চির শায়িত করিতে তাঁরে মাটি।
কিসের নেশায়, কিসের আশায়
করছি লড়াই করিতে বড়াই?
কেন ছুটছি উর্দ্ধপাণে
প্রভুর ডাক শুনিয়াও
কভু না শুনি যেন কানে।
আসিলে তাঁহার ডাক
বন্ধ হইবে জীবনের এই হাঁক,
সবকিছুই ছাড়ি রইবো পরে মরি
অজ্ঞাত দিনে স্রষ্টাই শুধু জানে
জীবন নেবে মোড় মরণের সেই বাঁক।
চলি আমি রাস্তা পথে
মরণ আমার সাথে সাথে
হঠাৎ জাপটিয়ে ধরিবে
নাহি মোরে ছাড়িবে
স্বজনরে করিয়া নিরাশ
সেতো করবেই মোরে বিনাশ।
মরণ এ যে, শাশ্বত চিরন্তন।
আসিলে মরণ শুনিবে না বারণ
এ যে বিধাতার অখণ্ড বিধান
স্বাদ নিবে প্রতিটি জীবন বলিতেছে কোরআন।
মায়া মমতার বন্ধ ছাড়ি
ভূলোক ছাড়িয়া দ্যুলোক দিতে হবে পাড়ি।
মুসাফির মোরা এই পৃথিবীর,
জমিয়েছে পাড়ি কত না জোয়ান, কত না বীর।
দাদা→বাবা→ছেলে→নাতি
আসিবার কালে,
দাদা রই বাবা যায়
ছেলে থেকে নাতি ঝড়ে অকালে।
সময় থাকিতে করিও স্মরণ
উদ্দেশ্য ছিলো কী তাঁহার;
ভূবনেতে পাঠাইবার;
করিতে বরণ, শাশ্বত মরণ।
ইবাদত তাঁহার করিবার লাগি পাঠিয়েছেন মোরে
না করিলে সাধন, মলিন হইবে বদন
মরণের পরে অন্ধকার কবরে
শেষ বিচারের দিন ঐ হাশরে।
ফেরেস্তাকুল আসিয়া কহিবে
সাথী হীন বাতি হীন তিমির ঐ গোরেতে
“রব কে তোমার দ্বীন কী তোমার, রসুল তোমার কে?”
মিলবে মুক্তি সফল এর জবাবে, ভয়ানক ঐ কবরে।