-দেশ, প্রকৃতি ও ইতিহাস ক্লাসের শেষ বেঞ্চের শেষ ছাত্র হিসেবে পঠিত ইতিহাসের পাতা থেকে দেশ, মাটি ও মানুষকে নিয়ে আমার ভাবনা।-
এশিয়ার ভূখণ্ডে, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে, ছোট্ট একটি দেশ
ক্ষেত ভরা ধান, দখিনা বাতাসে দোলে কৃষকের প্রাণ
রাখাল বাজায় বাঁশি, মেঠো পথ বেয়ে চলা কৃষাণীর হাসি
মাঠ, ঘাট, পথ প্রান্তর জুড়ে
সবুজ সুনীল আকাশের মহা সমাবেশ
এ যে আমারই মাতৃভূমি চির সবুজ শ্যামল ভূমি
স্বাধীন বাংলাদেশ।
সবুজের বুক চিরে, সাগরের তীরে যেতে ফিরে নীড়ে
চলেছে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা আবহমান কাল ধরে
দুঃখ বেদনা জরা-জীর্ণ ভুলে
সাধের সম্পানে রঙিন সেই পাল তুলে
চলেছেন মাঝি ভাই, বেয়ে তার নৌজান
গেয়ে মধুর ভাটিয়ালি গান, মন ভুলানো ঐ সুরে।
ঋতু যায় ঋতু আসে তার ক্রম শেষে
নিত্য নতুন রং ছড়ানো, চোখ জুড়ানো,
মন ভুলানো বেশে।
ষঢ়ঋতুর আমার এ দেশ,
রূপের যার নাই তো কোন শেষ
এ যে আমারই জন্মভূমি,
চির নতুন অপরূপ তুমি
সার্বভৌম বাংলাদেশ।
তোমারি রূপে গুণে মুগ্ধ নয়নে
রূপের বর্ণনা দিতে কত কবি লিখেছেন কত কবিতা
বর্ণিত হয়েছে তাতে কিছু,
অপ্রকাশিত রয়েছে আছে যত তোমার সবই তা।
তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছেন যত কবি,
সুখ, দুঃখ গাথা যত সব কথা লিখেছেন সব-ই।
তাঁদের লেখোনির খুঁরধার, দুর্জয়, দুর্বার
সঞ্চার করে মনবল যুগে যুগে তোমারি নবীন দল;
ডিঙ্গিয়ে বাঁধার পাহাড়, ভেঙ্গে করেছে সব চুরমার।
তোমার আছে যত ঐশ্বর্য, ধনরত্ন,
করেছো লালন, বক্ষে ধারণ করে পরম যত্ন।
সেই লোভে যুগে যুগে যত হায়েনার দল,
লুটেছে তোমায়, বিঁধেছে আমায় প্রয়োগে বাহুবল।
তোমারই কথা শুনে এসেছে যত পরদেশী
রয়েছে জনম ভরে, ভালোবেসে তোমারে
তোমার শুনিয়া গান, ভরিয়া মন প্রাণ
মুক্ত করতে তোমায় অনেকেই করেছেন জীবন বলিদান।
রূপকথার গল্প, অনেক বেশি কিংবা অল্প
অনেকেই করেছেন রচনা, গেয়ে তোমার বন্দনা
জান্নাতাবাদ তুমি চির জিন্দাবাদ।
অনেকেই এসেছে তোমার মসনদে বসেছে
শোষিত করেছে তোমায়, সম্পদ লুটেছে।
ফরাসী, পর্তুগিজ, বৃটিশ কিংবা ওলন্দাজ
ধনরত্নে তোমার ছিলো সকলেই ধান্দাবাজ।
ক্ষণিকের তরে হারিয়ে দিকপাল
সমৃদ্ধির পথে চলতে হয়েছো বেসামাল।
অবশেষে পেয়ে কাণ্ডারী, দুশমনেরে দিয়ে হুশিয়ারি
সঠিক পথে উন্নতির ঘাটে চলেছে তোমার তরী।
রবী ঠাকুরের আমার সোনার বাংলা তুমি
জসিম উদদীনের সোজান বাঁধিয়ার ঘাট
তুমি কৃষাণ-কৃষাণীর সোনা ফলানো বিস্তীর্ণ সেই মাঠ।
নজরুলের বিদ্রোহী তুমি, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলা তুমি
শহীদের রক্তে রঞ্জিত পুণ্য ভূমি, তুমি আমারই জন্মভূমি।