বঙ্গবন্ধু তুমি শেখ মুজিবুর রহমান
তোমারি কারণে লক্ষ শহীদ জীবন দানে
উড়িয়েছি মুক্ত পতাকা, পেয়েছি স্বাধীন দেশ,
এ যে রক্ত দিয়ে কেনা, বিশ্বের চিরো চেনা
সার্বভৌম বাংলাদেশ।
৭ই মার্চ উনিশ’৭১-এ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চত্ত্বরে
উঁচু করে তর্জনী দিয়েছিলে যে ভাষণ,
প্রকম্পিত করে গগন গর্জে উঠেছিল বাংলার জনগণ।
ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে হায়েনার দল, হারিয়ে মনবল
ছেড়ে ছিলো সিংহাসন অবসান করে দুঃশাসন,
হয়ে খান খান, পরাজিত হয়েছিলো ঐ পাকিস্তান।
বীর দর্পে সমরে সম্মুখে,
শত্রুর আক্রমণ দিয়েছিলো রুখে
হয়ে বলিয়ান, কিশোর, বৃদ্ধ নওজোয়ান,
জল স্থল কিংবা বনে একাত্তরের রণে;
পেয়ে নির্দেশনা, নিয়ে প্রেরণা তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান।
তুমি বলেছিলে গণ জোয়ারে ছেড়ে দীর্ঘশ্বাস
"২৩ বছরের ইতিহাস
বাংলার মানুষের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস।
২৩ বছরের ইতিহাস
... নির্যাতিত মানুষের কান্নার ইতিহাস।"
তোমারই সুরে, বলি বারে বারে
তোমার ৫৫ বছর জিন্দিগীর ইতিহাস,
বাংলার মাটি ও মানুষের মুক্তির উল্লাস।
তোমার ৫৫ বছর কর্মযজ্ঞের ইতিহাস,
পলাশির প্রান্তরে অস্তমিত সূর্য
একাত্তরে উদিত আলোর উদ্ভাস।
তোমার ৫৫ বছর বাংলার জমিনে পদচারণের ইতিহাস,
আবদ্ধ পাখি ডানা মেলে মুক্ত আকাশে উড়বার উচ্ছ্বাস।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ তুমি গর্বিত এক ইতিহাস,
নিখিল ভূবনে, বাংলার জমিনে
স্বাধীনতার সৌরভ ছড়ানো, প্রাণ জুড়ানো মুক্ত বাতাস।
তুমি বলেছিলে, লক্ষ জনতার ঢলে
"এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।",
তোমারই মন্ত্রমুগ্ধে, শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে
লড়ে ছিলো শহর, বন্দর থেকে শুরু করে বাংলার প্রত্যন্ত গ্রাম।
তুমি অকুতোভয় শত্রুর তরে ছিলে সদা নির্দয়
তুমি ছিলে নির্ভয়, দুরন্ত দুর্জয়,
করো নিতো আপস, সাথে কখনো মানবরূপি যত রাক্ষস
তাদের করতে পরাজয় লক্ষ্যে জাতির বিজয়;
বরণ করতে মরণ রেখেছিলে জীবন বাজি,
হাসি মুখে এগিয়ে ছিলে তুমি গ্রহণ করতে ফাঁসি।
তুমি বলেছিলে তাই, লক্ষ জনতা বজ্র কণ্ঠে দিয়েছিলো সাই
"আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাইনা, মানুষের অধিকার চাই"
... হিন্দু-মুসলমান সবাই আমাদের ভাই।"
----------------
"আমি বলে দিতে চাই,
আজ থেকে কোর্ট-কাচারী,
হাইকোর্ট, সুপ্রীম কোর্ট, অফিস, আদালত,
... অনির্দিষ্ট-কালের জন্য বন্ধ থাকবে।
কোন কর্মচারী অফিস যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।"
পেয়ে তোমার নির্দেশ ভুলে সকল বিদ্বেষ
কাঁধে কাঁধ, হাতে রেখে হাত, মিলে সব জাত
লড়াই করতে ময়দানে, জালিমের আগ্রাসনে
আঘাতে আঘাতে করেছিলো শত্রুর মুণ্ডপাত।
তুমি ছিলে নির্ভীক সত্যের সৈনিক
তুমি নও তো অতীত কিংবা আগন্তুক কোন পথিক,
তুমি নিত্য সদা সত্য হররোজ দৈনিক।
তুমি ছিলে মহানুভব, সকলের তরে সদ্ভাব
তুমি ছিলে মহা উদার, করুণা পাওয়া খোদার,
জীবন দিলে তুমি, মুক্ত করতে মানবতার।
তুমি এক মহামানব তোমার ডরে কেঁপে ছিলো সকল দানব,
তোমার ব্যোম(আকাশ)ফাটানো হুংকার, শানিত অস্ত্রের ঝংকার,
বাতিলের দুর্গ, ভেদিয়া হয়েছিলো সব চূর্ণ
ছেড়ে যেতে হয়েছিলো বাধ্য
ছিলো নাকো সাধ্য, তোমাকে দমাবার।
তুমি হিমালয়, তুমি দেশ প্রেমের মহা বলয়
তুমি মজলুমের নীড়ালয় জুলুমের মহাপ্রলয়,
তুমি মনুষ্যত্বের এক মহাবিদ্যালয়।
তুমি মহাবীর গড়তে স্বাধীন নীড়
তুমি স্থির, নুয়াবেনা কভু তোমার সুউচ্চ শির।
তুমি দৃশ্য গোটা বিশ্ব, সৃষ্টি স্রষ্টার
তুমি উৎকৃষ্ট মহাপুরুষ ঐ বিধাতার।
তুমি আর্তের হয়ে ধূর্তের তরে
পেরিয়ে চড়ায় করেছো লড়াই,
তুমি বাংলার এক মহা বড়াই।
তাইতো ইতিহাসে তুমি আজ চির অক্ষয় চির অম্লান,
মুক্তির দিশারী তুমি শেখ মুজিবুর রহমান।