রাতের নির্জনতা বাড়ার সাথে সাথে-
বাড়তে থাকে টিকটিকির টিকটিক শব্দ।
পশ্চিমের মেহগনি গাছ থেকে,
একসাথে ডেকে ওঠে নিশুতি পাখির দল।
দূর থেকে ভেসে আসা কুকুরের কান্নার শব্দে-
বিউগলের করুন সুর খুঁজে পাই।
নিস্তব্ধ রাতের এই অচেনা গাম্ভীর্যতায়-
নিজেকে একা মনে হয়;
ভেতরটা কেবলই খালি-খালি লাগে।
তোমার শূন্যতা-তোমার অভাব এতোটাই পোড়ায়,
যা বুকের পাঁজর ভাঙার কষ্ট হয়ে-
ক্রমশ আমায় নিদ্রাহীন করে তোলে।
সেই নিদ্রাহীনতার না বলা কারন যদি পড়ে ফেলে মন-
তবে এক ফোঁটা প্রশান্তির খোঁজে-মুঠোফোনে চলে যায় হাত;
ঠিক তোমার নাম্বারটায় ডায়াল করে বসে।।
ঘুমের চাদরে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকা তুমি আর তোমার কণ্ঠ;
ঘুম জড়ানো কণ্ঠ!!
যার প্রতিধ্বনি রূপকথার সেই রুপোর কাঠি-সোনার কাঠির মত,
নিমেষেই অচেনা আবেশে সবকিছু বশীভূত করে ফেলে।
সেসময় তোমার কণ্ঠনালী দিয়ে বের হওয়া এক-একটা শব্দে,
এতটাই মাদকতা থাকে-
শরীরে এক অন্যরকম শিরশিরে অনুভূতি তৈরি হয়।।
যেন এক উচ্চ মাত্রার সিডেটিভ ড্রাগ- নেশার মত!!
যে নেশার জাল ছিড়ে বের হওয়া অসাধ্য,অ-সাধ্য!!
তোমার ঘুমে আচ্ছন্ন কণ্ঠের মাদকতায় আসক্ত হবো বলেই-
বারবার মাঝরাতে ফোন দিয়ে বসি।
শত নিষেধ বারণের তোয়াক্কা না করে,
ফোনের একপাশে কান পেতে রাখি।
কখনো কখনো তোমার ঘুমে থাকা কণ্ঠ এতটাই ভয়ংকর হয়-
যেমনটা হেমলক!!
যে হেমলক পানে হাসতে হাসতে দেহত্যাগ করেছিলো মহামতি সক্রেটিস।।
তোমার ঘুমে আচ্ছন্ন কণ্ঠস্বর আমার কাছে এমনই এক ঘোর-
যে ঘোরে বারবার হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে;
তোমার ঘুম জড়ানো কণ্ঠের মাতাল হাওয়ায়-
আমার ভাসতে ইচ্ছে করে!!
ডুবতে ইচ্ছে করে-আবার ভাসতে ইচ্ছে করে!!
তোমার ঘুমে জড়ানো কণ্ঠের টানই হয়তো-
আমায় তোমাতে বেঁধে রাখে!!
-------------
মানচিত্র