সময় কি!
সময়, শুধুই কি ঘড়ির চিরচেনা টিকটিক শব্দ-
আর তিনটে কাঁটার নিরবচ্ছিন্ন ছুটে চলা;
নাকি দিন, মাস আর বছরের খেলা!!
নাকি সময় আরও জটিল কোন কিছু; রকেট সাইন্স!!
পৃথিবীর নিজ কক্ষ পথে অবিরাম ঘোরাফেরা-
তারপর সেই আহ্নিকগতি-বার্ষিকগতি,
এরপর অক্ষরেখা বিষুবরেখা হয়ে-
ভরা কটাল- মরা কটালের খেলা।।

আচ্ছা এই পৃথিবীর সব ঘড়িতেই ৬০ সেকেন্ডে মিনিট-
আর ৬০ মিনিটে ঘণ্টা হয়;
তবু সবার সময়টা একই রকম কেন নয়!
আমার কাছে সময় তাই, সময়ের হিসেবে নয় বরং
সময়টা উপভোগ্য না ক্লেশাবহ, তার মাপকাঠিতে হয়!!
সময় যার ভালো যায়,
সময়ের হিসেব নিকেশ তার জন্য নয়।
কঠিন সময় পার করে যে,
তখন সেই শুধু জানে
ঘড়ির কাঁটা কতক্ষণ ঘুরলে
কেবল তাকে সেকেন্ড,মিনিট আর ঘণ্টা বলে!!

সময়কে বুঝতে চাইলে কঠোর পরিশ্রমী কোন মানুষ,
অথবা কোন রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে দেখো, কাছে যাও-
জানতে পারবে মাথার ঘামে পা ভিজতে,
ঠিক কতটা সময়ের প্রয়োজন পড়ে!!
যেমন একজন মধ্যবিত্ত জানে,
মাসের শেষ সপ্তাহের সময়ের গতি ঠিক কতটা শ্লথ।
সময় কতটা সময় নিলে কেবলই মনে হয়-
সংসারের সব যেন শেষ হয়ে আসে, কেবলই সময়টা নয়।।

সদ্য বেকার জীবনে প্রবেশ করা ভার্সিটির ছাত্রটা,
সে এখন জানে-
বেশ জানে;
বন্ধু বান্ধবের আড্ডায় কাটিয়ে আসা সময়-
আর চাকরির প্রত্যাশায় পার করা এক একটা মুহূর্ত
এই দুয়ের মাঝে সময়ের ঠিক কতখানি ব্যবধান!!

যে মানুষটা তার প্রিয় জনকে হারায় বা
তার কাছ থেকে দূরে সরে যায়,
হোক বিরহে বা ধোঁকায়-
সে জানে পৃথিবীর দীর্ঘতর রাতটি
কেবল ২১ ডিসেম্বর নয়,
বরং এরকম অজস্র রাতের এক একটা প্রহর
তার চেয়েও বেশী দীর্ঘায়িত হয়!
আসলে প্রিয়জন যখন পাশে না থাকে;
তার কি বা রাত আর কি বা দিন,
পুরোটাইতো তার অন্ধকার সময়।।

মেয়েটা যখন ধর্ষিত হয়, যে সময়ে হয়
সেই সময়টা তার কাছে তখন
পৃথিবীর দীর্ঘতম সময়, সর্বোচ্চ যন্ত্রণাদায়ক সময়।।  
তার হৃদযন্ত্রের শব্দ সে তখন না শুনলে ও
ঘড়ির কাঁটার ধীর স্থির হেঁটে চলার প্রতিটা শব্দ
সে ঠিক শুনতে পায়!  
চোখ বন্ধ করলে এখনো শুনতে পায়!!
কিন্তু সেই মানুষটা;
না মানুষ না মানুষরুপী হায়েনা-
সেই পশুটার কাছে ও সময়টা কি একই রকম ছিল?
ছিল না।।
তখন তার কাছে সময়টা কেবলই-
উপভোগের! উৎসবের ! বিজয়ের!!  

একই স্থান-একই সময় যখন ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন রয়,
সেই সময়ের সংজ্ঞা তখন আমারে কাছে ও ভিন্ন হয়।।



----------
মানচিত্র