কর্পোরেট জবের নামে সেই নয়টা-ছয়টার জীবন
আমায় আর গোধূলি উপভোগ করায়না
বৃষ্টির স্নিগ্ধ শীতলতা অনুভব করায়না
সকালের সূর্য বা ভোরের শিশির কোনোটাই দেখায়না!!

এই কর্পোরেট জবের কর্পোরেট কালচার
আমায় নিত্য স্বার্থপরতা শেখায়
বেশির চেয়ে বেশি আত্মকেন্দ্রিক হওয়া শেখায়
লাভ-ক্ষতির হিসেব কষে ক্রেডিট কার্ডের ইএমআই শেখায়
আর চুপিসারে পণ্য দাসত্বে অভ্যস্ত করে ।।

একই বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া আমি,
যার বাসা টু অফিস আজ জীবনের ব্যাসার্ধ
দৃষ্টিসীমা অফিসের এসি গাড়ির জানালায় সীমাবদ্ধ।
আমার নাক পারফিউমের মিষ্টি সুগন্ধ ছাড়া
আর কোন কিছু পায়না;
আমার চোখে নিম্নশ্রেণির মানুষদের
নিত্যদিনের বেঁচে থাকার যুদ্ধ ধরা পড়েনা ।
বরং নিজে থেকে হারিয়ে যাই কৃত্তিম পৃথিবীতে।।

অফিস শেষে বাসায় ফিরে,
ঘর ভর্তি অনেকগুলো দেহ দেখি, কোন প্রিয়জন দেখি না
পাশাপাশি সবাই বসে থাকি, খুব একটা কথা হয়না;
ভালোবাসা নিয়ে কারো মুখ পানে চাওয়ার,
এতটুকু ফুরসৎ হয়না!!
সভ্যতার চরম উৎকর্ষতা আর আমাদের এই যান্ত্রিক জীবন
দু'য়ে মিলে নিভৃতে নিঃসংশয়ে
এক বোধহীন অসামাজিক জীব তৈরি করছে।
যেখানে আমাদের ভালো লাগা, খারাপ থাকা
সমস্তকিছু, হাতের মুঠোয় থাকা যন্ত্রটা নিয়ন্ত্রণ করছে।।

আমার ঘড়ির কাটায় আটকে পড়া একঘেয়েমি জীবন
প্রযুক্তি নির্ভর তথাকথিত এই আধুনিক জীবন  
আমাকে জীবনের অর্থই ভুলিয়ে দিয়েছে,
বেঁচে থাকার উপকরণ বদলে দিয়েছে;
আর ধীরেধীরে জীবন্ত জড় পদার্থে পরিণত করছে!!



মানচিত্র

২২-১১-২০২২