আমার কিছুকথা
Geoffrey chaucer এর The Canterbury tales এর ১৭০০০ লাইনের অনুবাদ আমি ধারাবাহিক ভাবে দিয়ে যাবো।
যে রাতে লেখক চসার ট্যাবার্ড সরাইখানায় অবস্থান করতেছিলেন সেইরাতেই সরাইখানায় অবস্থান করা ২৯ জন তীর্থযাত্রী আসেন। চসার তাদের পরিচয় দেওয়ার মনস্থির করেন। তারই প্রেক্ষাপটে প্রথমে এক নাইটের (যোদ্ধার) কথা বলার সময় এসেছে।

(আজকে আসরে- মূল প্রস্তাবনার ৪৩ থেকে ৮০ তম লাইন অনুবাদ করে দেওয়া হলো)

(নাইটের পরিচয়)

আমাদের মধ্যে ছিল এক যোগ্য নাইট বীর       ৪৩
শৌর্য বীর্য তার জীবন ছিল অশ্ব আরোহীর।
ঘোড়া চালনা বড় নেশা ছিল, ভ্রমণ ছিল শখ
বিশ্বজোড়া খ্যাতি ছিল, উদারে অপূর্ব নিয়ামক।
প্রভুর জন্য সে ছিল যোগ্য বীর এই বসুধায়
এই কারণে পৌঁছেছিলো সে খ্যাতির চূড়ায়।
প্রভুর সাথে ঘুরেছিলো খ্রিষ্ট অখ্রিস্ট কত দেশ
নিজ যোগ্যতায় প্রশংসা কুড়িয়েছিল বেশ।        ৫০
আলেকজান্দ্রিয়া জয়ে ছিল সে প্রভুর সঙ্গক্ষণ,
বহু খ্যাতি সম্মানের সে পেয়েছিলো আসন
প্রুশিয়ার বিদেশি দক্ষ নাইট বীরদের চেয়ে-
লিথুনিয়া রাশিয়ার যুদ্ধেও ছিল বেশ এগিয়ে
কোনো খৃষ্টান নাইট পায়নি তার সমকক্ষতা
গ্রানাডাও দেখেছিল তার যুদ্ধ জয়ের ধৃষ্টতা।
করেছিল সে আলজিয়ার্স মরক্কোতে যুদ্ধযাত্রা
আয়েশ অটালিয়াও দেখেছিল বীরত্বের মাত্রা
ভূমধ্যসাগরের জল স্বয়ং জলজ্যান্ত প্রমাণ
করেছিল কতশত, অভিজাত অভিযান।           ৬০
প্রত্যক্ষ পনেরো বড় লড়াইয়ের দেখেছিল মুখ
প্রতিবার যুদ্ধে চিড়েছিল সে শত্রুসেনার বুক।
আলজেরিয়ার তিন নামকরা খিস্ট দ্বন্দ্ব ধর্মযুদ্ধে
প্রভুর সাথে নাইট নেমেছিল শত্রুর বিরুদ্ধে।
এক সময় সে নাইট বালাতের অধিপতির সাথে
গিয়েছিল যুদ্ধের জন্য বহুদূর, তুরস্কের পথে।
এই নাইটের অবদান সত্য, ছিল সে মহান
সে বড়ই সাহসী বিচক্ষণ, তেজস্বী বুদ্ধিমান
আচার আচরণে সে নাইট নম্র কুমারীর আভা
কখনো তার মুখে কটু কথা, পায়নি শোভা        ৭০
সারাটা জীবন ধরে। সে আসলেই ছিল বোদ্ধা,
নাইট ছিল শান্ত ভদ্র এবং প্রকৃত এক যোদ্ধা।

এখন তার পোশাক পরিচ্ছদের কথা বলা যাক
অশ্ব ছিল ভালো কিন্তু ভালো ছিলনা সাজ পোশাক।
পরণে ছিল সুতি কাপড়ের কোট। তাও তার বক্ষ
ছিল ক্ষয় ধরা; বর্মদাগে ভর্তি হাজার লক্ষ লক্ষ।
কারণ নাইট দেশভ্রমণ করে ফিরেই সবেমাত্র
আবার সে শুরু করেছে তার এই পবিত্র তীর্থযাত্র
সাথে তার পুত্র আর এক যুবক ভৃত্যচর (চাকর)
নাইটের পুত্র উজ্জ্বল প্রেমিক, অবিবাহিত সুদর্শন নর ৮০

চলবে...

(পরবর্তী পর্বে নাইটের পুত্র আর ভৃত্যের পরিচয় দেওয়া হবে)

*****************************
This translation has made from The Canterbury tales which was written by Geoffrey chaucer.

******************************
একযোগে (১-৮০তম লাইন)


সুমিষ্ট জলধারা নিয়ে যখন এপ্রিল আসে            ১
তখন মার্চের খরা মাঝের বৃক্ষরাজি পুলকে হাসে।
বৃক্ষের প্রতিটি শাখা প্রশাখা বৃষ্টিজলে ভিজে
পুষ্টিরসে কত ফুল ফোটায়, ভালো লাগে কি যে!
যখন সুমধুর উতরোল পশ্চিমা পবনও ধায়
পাহাড়ী বন, উষর প্রান্তর যেন জীবন খুঁজে পায়।
কত কচি কচি শস্য আর অরুণ জেগে উঠে
এবং মেষরাশি পলকেই যায় অর্ধপথ ছুটে।
ছোট ছোট পাখির কণ্ঠে খেলা করে গান
তাদের বিনিদ্র আঁখি ঘটায় রাত্রির অবসান।       ১০
(প্রকৃতির সৌন্দর্য ছেয়ে ধরে, তাদের অন্তরে)
এমনি স্নিগ্ধ সময় তীর্থযাত্রী, তীর্থযাত্রা করে।
ছুটে চলে তীর্থযাত্রী, দেশ বিদেশের দূরদূর তীরে
বিভিন্ন স্থানে, চেনা অচেনা মাজারের ভিড়ে,
                 প্রধানত প্রতিটি প্রান্তের শেষে
ভ্রমণ করে ইংল্যাণ্ড হতে ক্যান্টাবেরির দেশে
যায় পবিত্র পুণ্যবান শহীদের আত্মার সন্ধানে
যারা (পবিত্র আত্মা) অসুখে তাদের সুস্থতা আনে।
এমনি হয়েছিল একদিন সেই মৌসুমে,
আমি ট্যাবার্ড সরাইয়ে ছিলাম শুয়ে নির্ঘুমে,      ২০
তল্পিতল্পা নিয়ে যেতে প্রস্তুত তীর্থযাত্রার পথে
ক্যান্টারবেরিতে খুব ধর্মভীরু মনোরথে।          ২২
সেই সন্ধ্যায় সরাইখানায় এক ভীষণ কোলাহল  ২৩
এসেছে নয় এবং কুড়ির (২৯জনের) এক সংঘবদ্ধ দল
তারা একেকজনে একেক পেশার, একেক দয়াদাত্রী
ঘটনাচক্রে তারাও ছিলো, সবাই তীর্থযাত্রী
তাদের সকলেরও যাত্রা ছিল ক্যান্টাবেরির দিক
সরাইখানার শোবার ঘর-আস্তাবল, প্রশস্ত ছিল ঠিক।
আমাদের জায়গা ছিলো সেরা সবার চেয়ে
সূর্য তখন ঘুমবিশ্রামে, ভীষণ ক্লান্তি পেয়ে।       ৩০
রাতসুযোগে, সবার সাথে, গল্প হলো ভালো
তারা তখন, সবাই আমার, যাত্রা পথের আলো।
কথা হলো যাত্রা হবে, ভীষণ ভীষণ প্রাতে
যেথায় যাবে, আমিও যাবো, তীর্থদলের সাথে।
আমার কাছে সময়-সুযোগ দুটোই বেশি আছে,
তাদের পরিচয়টা জানান দেই, গল্প বলার পাছে
শুনলামটা কি, জানলামটা কি, জানিয়ে দিতে সব
যুক্তিযুক্ত বেশি হবে, এটা আমার অনুভব।
অল্প কিছুই জানা হলো, রাতের গল্পস্বল্প মাঝে
তারা কে? করে টা কি? ন্যস্ত কি কাজে?          ৪০
জানান দিবো বেশভূষা, পোশাক পরিধেয়
যেমন এক নাইটের কথা বলবো শুরুতেয়।       ৪২

আমাদের মধ্যে ছিল এক যোগ্য নাইট বীর       ৪৩
শৌর্য বীর্য তার জীবন ছিল অশ্ব আরোহীর।
ঘোড়া চালনা বড় নেশা ছিল, ভ্রমণ ছিল শখ
বিশ্বজোড়া খ্যাতি ছিল, উদারে অপূর্ব নিয়ামক।
প্রভুর জন্য সে ছিল যোগ্য বীর এই বসুধায়
এই কারণে পৌঁছেছিলো সে খ্যাতির চূড়ায়।
প্রভুর সাথে ঘুরেছিলো খ্রিষ্ট অখ্রিস্ট কত দেশ
নিজ যোগ্যতায় প্রশংসা কুড়িয়েছিল বেশ।        ৫০
আলেকজান্দ্রিয়া জয়ে ছিল সে প্রভুর সঙ্গক্ষণ,
বহু খ্যাতি সম্মানের সে পেয়েছিলো আসন
প্রুশিয়ার বিদেশি দক্ষ নাইট বীরদের চেয়ে-
লিথুনিয়া রাশিয়ার যুদ্ধেও ছিল বেশ এগিয়ে
কোনো খৃষ্টান নাইট পায়নি তার সমকক্ষতা
গ্রানাডাও দেখেছিল তার যুদ্ধ জয়ের ধৃষ্টতা।
করেছিল সে আলজিয়ার্স মরক্কোতে যুদ্ধযাত্রা
আয়েশ অটালিয়াও দেখেছিল বীরত্বের মাত্রা
ভূমধ্যসাগরের জল স্বয়ং জলজ্যান্ত প্রমাণ
করেছিল কতশত, অভিজাত অভিযান।           ৬০
প্রত্যক্ষ পনেরো বড় লড়াইয়ের দেখেছিল মুখ
প্রতিবার যুদ্ধে চিড়েছিল সে শত্রুসেনার বুক।
আলজেরিয়ার তিন নামকরা খিস্ট দ্বন্দ্ব ধর্মযুদ্ধে
প্রভুর সাথে নাইট নেমেছিল শত্রুর বিরুদ্ধে।
এক সময় সে নাইট বালাতের অধিপতির সাথে
গিয়েছিল যুদ্ধের জন্য বহুদূর, তুরস্কের পথে।
এই নাইটের অবদান সত্য, ছিল সে মহান
সে বড়ই সাহসী বিচক্ষণ, তেজস্বী বুদ্ধিমান
আচার আচরণে সে নাইট নম্র কুমারীর আভা
কখনো তার মুখে কটু কথা, পায়নি শোভা        ৭০
সারাটা জীবন ধরে। সে আসলেই ছিল বোদ্ধা,
নাইট ছিল শান্ত ভদ্র এবং প্রকৃত এক যোদ্ধা।

এখন তার পোশাক পরিচ্ছদের কথা বলা যাক
অশ্ব ছিল ভালো কিন্তু ভালো ছিলনা সাজ পোশাক।
পরণে ছিল সুতি কাপড়ের কোট। তাও তার বক্ষ
ছিল ক্ষয় ধরা; বর্মদাগে ভর্তি হাজার লক্ষ লক্ষ।
কারণ নাইট দেশভ্রমণ করে ফিরেই সবেমাত্র
আবার সে শুরু করেছে তার এই পবিত্র তীর্থযাত্র
সাথে তার পুত্র আর এক যুবক ভৃত্যচর (চাকর)
নাইটের পুত্র উজ্জ্বল প্রেমিক, অবিবাহিত সুদর্শন নর ৮০


অনুবাদকাল- করোনাকালীন গৃহবন্দি সময়ে - জুন ২০২০ হতে বর্তমান