বণিকের পরিচয়

তীর্থদলে এক বণিকের দাড়ির মাঝ বরাবর ছিল চিড়,
মিশ্ররঙের জামা পড়ে সগর্বে ছিলো ঘোড়ার পিঠে চড়ে
ফ্ল্যামিসের এক টুপি ছিল তার মাথার উপরে,
সুচারুভাবে আবৃত ছিল তার জুতো জোড়ে
গম্ভীরভাবে সেই বণিক তার মতামত প্রদান করে।
সবসময় নিজের লাভ বৃদ্ধির দিকে থাকে তার মন
মিডলবার্গ আর ওরওয়েলের মধ্যবর্তী সমুদ্রপথ সারাক্ষণ
তার ইচ্ছে যেকোনো ভাবেই থাকুক খোলা উন্মুক্ত;
বিদেশী লেনদেনের ব্যাপারে সে ছিল ভালো পরিপোক্ত।
লেনাদেনা ধারকর্জ বিষয়ে কেউ জানত না তার হাল
নিজ কথা-কর্ম বিষয় গোপনে, ছিল খুব চতুর শৃগাল
এসবকিছু সে নিজ আয়ত্তে রাখতো খুব বুদ্ধিসহকারে
তাই দেনায় থাকলেও, কেউ কখনো জানতে না পারে।
প্রকৃতপক্ষে সে ছিলো বিচক্ষণ তীক্ষ্ণ বুদ্ধিভিরাম
কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, আমি জানি না তার নাম।


কেরানির পরিচয়

অক্সফোর্ডের এক কেরানিও ছিল তীর্থদলের সাথে
অনেক দিন ধরে যুক্তিশাস্ত্র নিয়ে ছিল সে মেতে
তার ঘোড়া ছিল মইয়ের মত রোগা, জীর্ণ দেহময়।
আমি হলফ করে বলছি নিজেও খুব মোটাতাজা নয়,
তবে সে ছিলো ফাঁপা কাহিল এবং খাবারে মিতহারী
কোটটি ছিল ছোটো খাটো নিন্তান্তই মামুলী আকারি ২৯০
জাগতিক বিষয়ে সে মাথামোটা, ছিল না তেমন অর্থ,
সংসার চালানোর জন্য সে একটা চাকরি জোগাড়ে ব্যর্থ।
বিছানায় মাথার কাছে দামী দামী পোশাক পরিচ্ছদ
                    বাঁশি বাদ্যযন্ত্র পায়না জায়গা পদ;
পরিবর্তে এরিস্টটল ও তার দর্শনসম্বন্ধনীয়  কুড়িখানা বই থাকে
সেই বইগুলো লাল কিংবা কালো মলাটে সে ঢেকে রাখে।
কিন্তু যদিও একজন যুক্তিবাদী দার্শনিক ছিল বটে
বিন্দু পরিমাণ সোনাও ছিলনা তার টাকা রাখার ঘোটে।
কিন্তু সে তার বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে যা সাহায্য পেত
তার সবটাই শিক্ষা গ্রহণ আর বই কিনতে চলে যেত।
এবং যে বন্ধুরা তাকে অর্থ দিত বিদ্যালয় যাবার তরে
একান্তভাবে তাদের আত্মার জন্য, প্রার্থনা করত প্রাণভরে।
সে বিদ্যা অর্জনে মনোযোগী এবং সর্বদা বিদ্যা অন্বেষী
কখনো সে বলতো না কথা, প্রয়োজনের চেয়ে বেশী
এবং যতটুকু কথা বলে, তার সবটুকু শুদ্ধভাবে বলে;
কথা তার সংক্ষিপ্ত, জীবন্ত যথাযথ অর্থময় বলা চলে।
তার কথা সবসময় পূর্ণ ছিল উপদেশ বাণী নীতিতে
আনন্দে সে রাজি শিক্ষা নিতে কিংবা কাউকে শিক্ষা দিতে। ৩০৮


(পরবর্তীতে উকিলের পরিচয় দেওয়া হবে)