তোমায় যখন প্রথম দেখতে গিয়েছিলেম
বয়স তখন আমার বাইশ কিবা একুশ,
তুমি বড়জোর ষোড়শী।
বসেছিলাম তোমার সাজানো ঘরে
আমি লাজুক, বড় লাজুক ছিলেম;
তোমার সাথে প্রথম দেখা হবে,
প্রথমবার আমার কনে দেখা বলে কথা।
আমার ছোট কাকা আমায় চিমটি কাটে
দৃষ্টিতে বুঝায়,
পা এতো কাঁপাস কেন!
ভূমিকম্প আসবে তো!
তুমি কন্যা ছিলে অন্য ঘরে
তুমি এলে কি বলবো, কি প্রশ্ন করবো
সেটা ভেবে আমি হয়রান।
তোমার বাবা বলে গেলো, তুমি আসতেছো।
আমি এঁটেসেটে বসলাম,
দৃষ্টি আমার নিচুমুখ, যেন পাতাল ফেড়ে ঢুকেছে।
খনিকবাদে পিচ্চিরা চিৎকার পাড়ে,
তুমি ঘর হতে দৌড়ে পালিয়েছো
তুমি নাকি বিয়ে করবে না!
আমি অবাক হবো
নাকি হাসবো ছিলাম সিদ্ধান্তহীন।
কোন ভাবনায় আমার গলা শুকালো
ঘামেরা আন্দোলন শুরু করলো
আমি ঘর হতে বের হলাম
এসে দাঁড়ালাম-
তোমাদের পুকুর পাড়ের আম গাছটির নিচে।
কাকা এসে বলে যায়,
মেয়ে সুন্দর আছে বটে,
একটু দুষ্ট বেজায়;
এর লগেই আজ তোর বিয়ে হবেই হবে।
খানিকবাদে
বয়স্ক এক মহিলার জোরালো কন্ঠস্বর;
ডাকে তোমার নামে
আমি আড়াল ছিলাম আম গাছটির
আর তুমি খড়ের গাদাটির ওপাশে।
বয়স্কা দাদীর হঠাৎ অমরবাণীতে ডাক পড়ে তোমার
মাগি কই গেলি?
দৌড়ে বের হইলি কেন্ ?
মাগি তোর বয়স হয় নি?
তুই ভাতার বানাবি না?
আমি লজ্জায় নিচু মুখ।
আর তুমি আমায় দেখে হাসি দিয়েছিলে ভীষণ রকম;
শুধু নীরব সম্ভাষণে আমাদের ভালোলাগা বিনিময়।
সেদিন সন্ধ্যে ছয় ঘটিকা
আমাদের স্বাগতম প্রহর বেলা
মালা বদলের খেলা শেষে
তুমি হলে আমার সুন্দরী মাগি,
আর আমি তোমার লাজুক ভাতার।
৩ ডিসেম্বর, ২০১৯
[ মাগি ও ভাতার শব্দের অর্থ ও উৎপত্তি
মাগি = ১. প্রাপ্তবয়স্ক স্ত্রীলোক , সাবালিকা নারী
২. যৌনকর্মী
ভাতার = ১. স্বামী / পতি ২. যে ভাত দেয় ৩. গালি বিশেষ ]
(বাংলা একাডেমি বাংলা আধুনিক অভিধান)
জ্ঞানেন্দ্রমোহনে আছে সংস্কৃত মাতৃগাম থেকে পালিতে মাতুগাম, সে থেকে প্রাকৃতে মাউগ্গাম, তা থেকে মাউগ, মাগু এবং মাগী (পুরনো বানানে)। রালফ লিলি টার্নারের ইন্দো-আর্য ভাষার তুলনামূলক অভিধানেও প্রায় একই ব্যুৎপত্তি। হরিচরণের মতে শব্দটি মাগ-এর সাথে ই যোগে নিষ্পন্ন, মাগ এসেছে মাউগ বা মাগু থেকে, মৈথিলিতে মৌগী বা মাগু দুইয়েরই অর্থ নারী। সুকুমার সেনের ব্যুৎপত্তি-সিদ্ধার্থে শব্দটি মার্গিতা থেকে, যার অর্থ মাগিবার জিনিস।
১৯৭৫ পূর্ববর্তী অসংখ্য বাংলা চলচ্চিত্রে মাগি শব্দটি আদুরে ডাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে!
(গুগুল হতে সংগৃহীত)]
(কাব্যগ্রন্থ-সম্ভাষণ)