ভাসছি আর ভাসছি-কচুরিপানার মত,
নালা-নর্দমায় ভাসমান ময়লার নগরে!
কখনো বদ্ধ পুকুরে;ছিঁড়ে খাচ্ছে ক্ষুধার্ত কাতলার ঝাঁক,
বাদ নেই চুনোপুটিরাও।
কখনো খালে কখনো বিলে,
যেখানে জলাবদ্ধতা সেখানেই ভাসছি অবিরত।
কখনো সোনা ব্যাঙের ভেলা হয়ে ,
কখনো বা ঘাস ফড়িঙের ভাসমান মাঠ হয়ে,
ভাসছি শিকার-শিকারিদের সঙ্গে নিয়ে!
রঙিন প্রজাপতিরা উড়ে এসে বসে যায় বারংবার।
সেই আমি,আষাঢ়ের কালো মেঘে ঢাকা ;
ঘুমন্ত রাতের বুকে-স্বপ্নে দেখি ,'সাগরে ভাসমান প্রমোদতরী"।
সেও আমার মতই ভাসছে,অথৈ জলরাশির আঁচলে,
ঝলমলে আলোকসজ্জা;যেন বিস্ময়ে বিস্মিত ক্ষণ!
বিশালাকার ঢেউয়ের গর্জন,যেন কিছু বলতে চায়;
ঘুম ভাঙে বজ্রপাতের বিকট শব্দে।
শ্রাবণের অঝোর ধারায় আমি ভাসতে থাকি -
খাল ছেড়ে ফসলের মাঠের উপর দিয়ে,
ভাসতে ভাসতে সাধ জাগে ;স্বপ্নের সেই প্রমোদতরী দেখার। স্রোতে ভেসে আটকে যাই,
জলের তোপে আছাড় খাই -যুবতি নদীর বুকে।
যেন নবযৌবনে টগবগ করছে!
ভিতরে জমা বাসনাগুলো;ঘূর্ণিপাক খাচ্ছে,
আমি তখন হারিয়ে যাচ্ছি একটু একটু করে।
ভাসতে ভাসতে ক্লান্ত হয়ে গেছি,
'ওই বুঝি সামনেই প্রমোদতরীটা'
কিন্তু না এ পথ যেন,ফুরাবার নয়,
খানিক বাদে হয়তো আমিই শেষ হব নিরবে!
জলে পোড়া মবিলের গন্ধ,আর
ভটভট,ভোঁভোঁ,হর্ণের শব্দে -নিস্তেজ মানসিকতা!
পুরনো স্মৃতিগুলো ভাসছে চোখের সামনে;
আকস্মিক, প্রমোদতরীর মত কিছু!
আমার উপর দিয়ে চলে গেলো,
অসম খন্ডিত দেহ,ধরাটা পড়ে একপাশে!
শুনতে পেলাম,কেউ যেন বলছে;
'তুমি খালে কিংবা বদ্ধ পুকুরে সুন্দর,
প্রমোদতরী তোমার জন্য নয়'
সজোরে চিৎকার করি,'কেন?'
প্রতিধ্বনিত হয় হৃদয়ে,কোনো উত্তর আসে না।