ড্যাং কুর কুর কুর, ড্যাং কুর কুর কুর
ঢাক বাজে ওই মাঠে ,
পুরুত ঠাকুর টিক্কি নেড়ে
আসলো পূজো পাঠে ।
'মা' দুগ্গার মুখে আজ
উপচে পড়ে হাসি ,
অস্ত্র ছেড়ে অসুর ভায়া
ধরেছে যে বাঁশি ।
ময়ূর বাহন কার্তিক আজ
গণেশ পানে চায় ,
ইঁদুর দেখে গণেশ দাদা
পাচ্ছে ভীষণ ভয় ।
'মা' লক্ষ্মী , ঝাঁপি হাতে ভাবছে
কাকে দেবেন !
সরস্বতীর বিদ্যা, বুদ্ধি
ধার চেয়ে কি নেবেন ?
ভাবছে গণেশ অনেক দিতো
হলো ইঁদুর সাথী ,
এবার যদি ময়ূর হতো
বাহন রাতারাতি ।।
মুণ্ডুটাকেও চাপিয়ে দিতাম
কার্তিকের ওই কাঁধে ,
কুমোরকে মা কে বলেছে
(আমায়) এমন করে সাজাতে ?
শান্তশিষ্ট সরস্বতী
ভাবছে অনেক কথা ,
দূর ছাই দূর মায়ের সাথে
এলাম কেনো হেথা !
হাঁসটা আমার জল না পেয়ে
শুকিয়ে বুঝি মোলো ,
কি যে করি উপায় এখন
শিগগিরই বাড়ি চলো ।
সরস্বতীর বায়না দেখে
লক্ষ্মী পেলো বুদ্ধি ,
বীণাটাকে হাতিয়ে নিয়ে
বললো - "শোন সরস্বতী "
দিলাম তোকে আমার প্যাঁচা
ফুরুত করে উড়ে যা,
ঝাঁপি ও দিলাম অনেক টাকার
যা খুশি তাই কিনে খা।
তাই না শুনে সরস্বতী
বাঁচল যেন হাঁফ ছেড়ে ,
মাটির হাঁসটা ভালো করে
দেখলো এবার নেড়েচেড়ে ।
দরকার নেই আর তো জলের
ঝাঁপিটাকেও বাগিয়েছি,
বিদ্যে বুদ্ধি আছে বলেই
যা চাই , তাই পেয়েছি ।
সাজাগোজা ময়ূরবাহন
দেখছে চেয়ে চারিদিক ,
এখানে তো কেউ সাজে নি
সবাই কেমন স্বাভাবিক ।
ল্যাংটার নেই বাটপারে ভয়
তাই বুঝি কয় পণ্ডিতে
ময়ূর ছেড়ে , ইঁদুর ধরে
হতেই হবে সাদাসিধে ।
এটাই বুঝি স্টাইল এখন
সাদাসিধে ভাবখানা,
ইঁদুর আমার বাহন হলে
ব্যবসা হবে রমরমা ।
সেজেগুজে গণেশ দাদা
ধরে ময়ূর পুচ্ছটা ,
বললো ব্যবসা দিলাম ছেড়ে
শোনা তুমি মা দুর্গা।
ডান দিকে কেন বীণার শব্দ ?
তাকিয়ে দেখেন মা দুর্গা,
ঝাঁপি ফেলে লক্ষ্মী বাজায়
সা,রে,গা,মা,পা,ধা,নি,সা।
বাঁ দিকেতে চেয়ে দেখেন
পড়ে আছে মাটির হাঁস,
কোথায় গেল সরস্বতী ?
হায় রে হায় সর্বনাশ !
ইঁদুর কেন হেথায় বসে
ময়ূরবাহন কোথায় রে?
কেউ শোনে না আমার কথা
কি হবে আর অসুর মেরে ?
ছেলে মেয়ে সবার যখন
এমন ধারা মতিগতি
আমি কেন মারবো অসুর
মহাদেবই করুন গতি ।
মাথার উপর আধ চক্ষু
শিবের পানে চেয়ে
মা দুর্গা রেগেমেগে
এলেন সেথায় ধেয়ে ।
'হায় রে হায়' আমি শুধুই
মিছিমিছি রাগি ,
সরস্বতী , লক্ষ্মী , গণেশ
সবাই হেথায় দেখি।
ওই তো হোথায় ময়ূরবাহন
তবে যা সব ভাবছিলাম ?
ধূপ, ধুনা আর আলোর ধাঁধায়
স্বপ্ন বুঝি দেখছিলাম ।