এই প্রথম অভিন্ন নামের লাল পদ্মের মতো বাসের খুবই নিকটতম দুটো সীটে বসে ছিলাম আমরা।
জানালার কাচের বাহিরে পেরুচ্ছি শহর,
নগর বন্দর আর সবুজবীথি ফসলের মাঠ।
আমার চঞ্চল হাতের আংগুল অকস্মাৎ দেখি,
অবশ আর নিরেট মুর্খ পাথরের মতো পড়ে আছে,
আমার হাটুর উপর যার শক্ত বিশ্রাম।
তার সাদা সদ্য নতুন ওড়না ফুড়ে বেরিয়ে আসছে,
লাভার মতো গলগল ঘ্রান।
মাঝে মাঝে চোখ তুলে তাকাই চোখের উপর,
চোখের রেটিনা, ধারালো ভ্রু, আর চোখের কপাট।
মানুষের গায়ের ঘেষা, ঘাম মাখা সার্টের উত্তাপ।
তোমার উপর আরো পড়ে আছে সহস্র চোখ,
অথচ মানুষ জানে না।
দুটো সীটের মাঝে, ঠিক মাঝ বরাবর যোজন ফারাক একটা বহমান নদী,
ক্লান্ত পথিকের জড়তা মাখা মতো ধীর স্রোত।
পাথরের চুর্ন, বালুর বাধ, জলের ভাংগাচোরা পথ।
থাক তোমাকে ছোবো না।
অসীম দূরত্ব বসে আছো।
আর বুকের ভিতর পুড়ছে শহর, দালান কোঠাবাড়ি, আসবাব, দরজা জানালা।
আচমকা বাস থেকে নেমে গেলে,
ইতিকথা, বিদায়ী আলাপন এমন কিছু তো থাকে?
থাক অপ্রাসঙ্গিক।
আমি তাকিয়ে ছিলেম বহুক্ষণ।
তারপর?
একটা দালানের শরীর তোমাকে অদৃশ্য করে তুললো,
আমি পরবর্তী স্থানে নেমে পড়লাম।
তারপর খেয়াল করলাম, তোমার ওড়না থেকে ঝরে পড়া এক আঁজল পুস্পিতার ঘ্রান,
ভুল করে রেখে গেছো আমার সার্টের মধ্য কোণে।
এবার ঠিকঠাক তোমাকে ছুয়ে ফেললাম,
তোমার অজান্তেই।