আমি চন্দ্রহারা,জ্যোৎস্নাছাড়া
অমাবস্যার রাত,
আমি গভীর বনে সূর্যবিহীন
দিনের প্রতিঘাত।
আমি চকমকিহীন আগুনবিহীন
আদিম গুহামুখ,
আমি অতল জলে শুক্তি বুকের
মুক্ত সাদা সুখ।
আমি দাবানলে সদ্যজ্বলা
গাছের করুণ রব,
আমি মহাকাশের শূণ্য বুকে
সুপ্ত আলোর শব।
আমি প্রলয়কালের ডমরু নিনাদ
সৃষ্টি শেষের লয়,
আমি এলোকেশী মহাকালীর
করাল রূপের ভয়।
আমি রাহুগ্রাসে গ্রহণ লাগা
বিবস্বানের রূপ,
আমি অর্ধবছর রাত্রিকালীন
মেরুর প্রতিরূপ।
'কৃষ্ণ' আমি,'কালো' আমি,
অমঙ্গলের ছায়া,
বসন্তে তাই ব্রাত্য আমি,
ব্রাত্য আমার কায়া।
রংবেরঙের আবীর খেলায়
লাগবে যখন ঢেউ,
স্মৃতির গভীর অতল থেকেও
ডাকবে নাতো কেউ।
মানছি আমি লয়ের প্রতীক,
মানছি আমি কালো,
কিন্তু তবু আমার ভিতর
নেইকি কিছুই ভালো?
গভীর চোখের কাজল আমি,
আমি নয়ন মণি,
কৃষ্ণকলির অঙ্গ শোভায়
আমি মহাধনী।
মাতৃজঠর অন্ধকারের আমি
শিশুর প্রাণ,
আকাশজুড়ে বরষ আগে
মেঘের অভিমান।
সুপ্ত বীজের স্ফুরনকালে
অর্ধচেতন আমি,
অলক শোভায় চিরকালই
আমি ভীষণ দামী।
জামের কালোয় সুমিষ্ট রস
আমিই করি দান,
অধর কোণের তিলের শোভাও
আমার প্রতিদান।
মনখারাপের বর্ণ আমি,
আমিই অভিমান,
কৃষ্ণ বরণ পিক কুলের
আমি কুহুতান।
সর্বোপরি রাসবিহারীর
গাত্রবরণ আমি,
তাঁর পরশে হলাম আমি
স্বর্ণসম দামী।
কুয়াশা