আলোড়িত হল ক্ষিরোদ সাগর,
শিহরিত চরাচর,
ভীষণ,ভয়াল নির্দয় রোষে
ফুঁসেছে রত্নাকর।
আঘাতে,আঘাতে মথিত সিন্ধু,
গরল করেছে দান,
ধূসর ধুম্রে সৃষ্টির বুঝি
হল আজ অবসান।
বহু যুগ ধরে মন্থন শেষে
উত্থিত সুধা ধারা,
দেব দানবের কাঙ্খিত ধন,
তবে কি হারাবে তারা?
সৃষ্টির সেই অন্তিম কালে
রুদ্রের বরাভয়,
সজীব করলো কালের চক্র,
সৃষ্টির স্থিতি লয়।
কন্ঠে নিলেন কালকূট বিষ,
শূলপাণি ত্রিপুরারি,
বিশ্বসৃষ্টি বাঁচালেন শিব,
সকল দুঃখহারী।
বিষের প্রভাবে অচেতন হল
তুষার শুভ্র কায়া,
মহাদেব বিনা বিশ্বে ঘনাল
বিপদের কালোছায়া।
মৃত্যুঞ্জয়ী মহাদেব যিনি
মৃতের সঞ্জীবনী,
তাঁকেও করলো অচেতন প্রায়
বিষের সম্মোহনী!
কোন সে অমোঘ মন্ত্রের বল
মহেশের দেবে প্রাণ?
বিষের তিব্র প্রভাব কাটাবে,
করবে জীবন দান!
বিপত্তারিণী জগৎ জননী
উদ্ধার করো মাতা,
কালকূট বিষে অচেতন আজ
বিশ্ব জগৎ ত্রাতা।
শক্তি স্বরূপা মহাকালী তুমি
এসো মা তারিণী তারা,
ঝরাও তোমার অমৃত সম
করুণার সুধাধারা।
জননী যেমন তুলে নেন কোলে
নাড়ী ছেঁড়া আত্মজে,
শিবানীও কোলে তুলে নেন শিব,
জননী তারার সাজে।
জননীর কোলে সন্তানসম
মহাযোগী মহাকাল,
মাতৃদুগ্ধে ছিন্ন করেন
বিষের তিব্র জাল।
মাতার বুকের অমৃত সম
সঞ্জীবনীর সুধা,
চেতনা ফেরায় জগৎ পিতার,
মেটায় সকল ক্ষুধা।
জগত্তারিণী মহাদেবী তারা,
শিব সহধর্মিণী,
তারো আগে তিনি সৃষ্টির মাতা,
কৃপাময়ী নারায়ণী।
পরম পুরুষ মহাদেবো তাই
সন্তান সম তাঁর,
তিনিই আদ্যা,তিনিই শক্তি,
তিনিই সারাৎসার।
কুয়াশা