কত স্বপ্ন ছিল তার
গভীর দুটি কালো চোখে!
নাহ! কোনো রাজার
রাণী হওয়ার স্বপ্ন নয়,
একটি ঘর,একটি বর
আর একটি সংসারের স্বপ্ন।
একটি শান্তির নীড়,
যেখানে সারাদিনের ক্লান্তি
হয়ে যাবে প্রশান্তি
প্রিয়জনের উপস্থিতিতে।
খুব কি বেশী কিছু
চাহিদা ছিল তার?
হ্যাঁ,তা ছিল বই কি!!
কারণ তার গায়ের রংটা
যে দুধে-আলতায় ছিল না।
শ্যামল অঙ্গের শ্যামলী
ছিল সে। তার কি এতো
স্বপ্ন দেখা মানায়??
কবিগুরুর যুগ তো
কবেই শেষ হয়েছে,
তাই কৃষ্ণকলির কালো
হরিণ চোখ দেখার লোকও
আজ বিরল। কিন্তু যে
রোজগেরে কালো মেয়ে
বাবা মায়েরও বোঝা হয়
তার কি স্বপ্ন দেখা উচিত?
বোধহয় না।
কিন্তু এই ভুলটাই
করে বসেছিল সে।
স্বপ্ন সাজিয়ে ফেলেছিল
ভবিষ্যতের। আর পাঁচটা
তথাকথিত রূপসীদের মতো।
এতবড় ভুল কি সহ্য করা যায়?
সহ্য করেও নি সমাজ।
প্রতি পদক্ষেপে বুঝিয়ে
দিয়েছে তোমার কাছে
এসব বিলাসিতা!
যতই তুমি একবিংশ
শতাব্দীর একজন
স্বনির্ভর নারী হও,
বিয়ের বাজারে তোমার
দর এখনো রূপেই ওঠে।
আমাদের গায়ের এই
চকচকে পোষাকটা দেখে
ভেবোনা মধ্যযুগটা পাল্টে গেছে।
আধুনীক হয়েছে শুধু খোলসটা,
অন্তরটা উজ্জ্বল করার কোনো
যন্ত্র কি আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞান?
সেটার আধুনিকীকরনের কোনো
প্রচেষ্টা কি কখনো সফল হয়েছে?
তাই তো সেটা সেই মধ্যযুগেই
পড়ে আছে।
নাহ! সেই কৃষ্ণকলি পারেনি,
গঞ্জনার চেয়ে আগুনের
লেলিহান শিখা তার
কাছে শীতল মনে হয়েছে।
পুড়িয়ে শেষ করে দিয়েছে
নিজের কালো শরীরটাকে।
শ্যামামায়ের 'শ্যামা মেয়ে'
আজ চলে গেছে ---
এক পরম শান্তির দেশে।
কিন্তু সমাজের বুকে এঁকে
দিয়ে গেছে এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন।
????????কুয়াশা?????????