একদা এক জননী ছিল পুত্র সনে
যক্ষের ধনের মতো দেখত তারে মনে,
কষ্ট, ত্যাগে, সাধনায় বড় করে তারে,
চোখের আড়াল হলে থাকতে নাহি পারে।
দিনে দিনে ছেলে তার সাবালক হলো,
পুত্রবধূ ঘরে এসে গৃহভার নিল,
মা নেওটা তনয় তার এ কেমন হলো!
বধূর আঁচল তলে ঠাঁই করে নিল।
যত্র-তত্র দোষ খোঁজে পুত্রবধূ তার
উঠিতে বসিতে খোঁচা সঙ্গী হলো তার,
গোপনে চোখের জল মা জননী ফেলে,
দেখেও দেখে না তাহা আপনার ছেলে।
আগ্রাসি পুত্রবধূর কোপেতে শাশুড়ি,
পর হয়ে রয়ে গেল আপনার বাড়ি।
মন চায় ছেড়ে যেতে তবুও না পারে,
নাড়ি ছেঁড়া ধন ছেড়ে যেতে নাহি পারে।
বহু সন পার করে সেই পুত্রবধূ
শাশুড়ি হয়েছে সে তো এনে পুত্রবধূ,
বিধির নিঠুর খেলা হাতে হাতে ফল,
আর্যার কর্তৃত্ব গেল বধূ ধরে হাল।
নববধূ বলে মাগো একাহারি হও,
আরাম আয়েস ছেড়ে ধর্মে মন দাও,
তীর্থ যাত্রা কর এবে পায়ে পায়ে হেঁটে,
সর্বদা হরির নাম থাকে যেন ঠোঁটে।
বাধ্য হয়ে তীর্থে ঘুরে গেল ছয় মাস,
ফিরে এল সন্তানের দেখিবার আশ,
ছেলে বউ কয় মনে একি সর্বনাশ,
আবার ফিরেছে ঘরে মোর সেই ত্রাস।
যুক্তি করি স্বামী সনে বৃদ্ধারে এবার
বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাইল জনমের তর,
কোথায় রইল সংসার কোথায় আত্মজ,
বিধির বিধান কেউ নেয় না তো খোঁজ।
বি.দ্র. স্তবক - চার চরণের
চরণ - দুই পর্বের,চরণগুলো মিত্রাক্ষর
পর্ব - ৮+৬
লয় - ধীর
ছন্দের নাম - অক্ষরবৃত্ত