সময়টা যে একাত্তর শ্রাবণের শেষ,
হানাদার আক্রমণে দুঃখিনী এ দেশ।
পিশাচ দল তখন হয়েছিল হন্যে,
চরম বিপদ ছিল অনূঢ়ার জন্যে।
বয়ঃ তার ছিল নয় আদরের কন্যা,
নাম দিলাম রোহিণী এবে বীরাঙ্গনা।
বিয়ে দিল বাপ তাকে মুক্তির আশায়,
অবুঝ বালিকা সে তো কাঁদিয়া ভাসায়।
বর তার যুবা ছেলে হাসি খুশি মন,
জননীর কাছে ছিল পতি হারা ধন।
ভাদ্রের শুরু তখন চলে গেল যুদ্ধে,
করিবে লড়াই সে তো শত্রুর বিরুদ্ধে।
শাশুড়ি ও পুত্রবধূ কেঁদে হয় সারা,
লাঞ্ছনা পেয়ে যে ফেলে নয়নের ধারা।
কার্তিকের মাঝামাঝি চিঠি পেল তারা,
স্বাধীনতা নিয়ে ওগো ফিরে আসব মোরা।
পৌষের প্রথমেই এলো স্বাধীনতা,
চারিদিকে ধ্বনি শুধু জয় বীর গাঁথা।
স্বাধীনতা নিয়ে ফেরে বহু বীর ছেলে,
কেন জানি ফিরিল না মায়ের সে ছেলে।
শোকে পাথর জননী গেল পরপারে,
রোহিণী তো রয়ে গেল অপেক্ষা প্রহরে।
এবে পথ চেয়ে রয় পতির আশায়,
অপেক্ষায় থাকে শুধু কাঁদিয়া ভাসায়।
কত শত বীরাঙ্গনা আছে মোর দেশে,
অপেক্ষায় আছে তারা প্রৌঢ়া রূপ বেশে।
স্বজনের পথ চেয়ে থাকে প্রতিদিন,
অভাব মাঝে তাদের দুঃখে কাটে দিন।
বি.দ্র. স্তবক - চার চরণের
চরণ - দুই পর্বের,চরণগুলো মিত্রাক্ষর
পর্ব - ৮+৬
লয় - ধীর
ছন্দের নাম - অক্ষরবৃত্ত