এক যে ছিল টুনটুনি ছিল না যে ঘর,
এদিক সেদিক ঘোরে ফেরে যেন যাযাবর।
খাবার জোটে নাহি তো খিদেয় কাতর,
সব হারিয়ে বিষণ্ন শোকেতে পাথর।

ছিল এক চড়াই যে নিয়ে পরিবার,
অভাব নাহি ছিল যে সুখে ভরা ঘর।
গৃহস্থ ঘরে বসতি কেটে যায় দিন,
পরিবারেতে সে আর ছিল জনা তিন।

কালবোশেখি উঠল এক বৈশাখের দিনে,
গৃহস্থ কুড়াল আম ঝোড়া দুই তিনে,
পেখম ভেঙে টুনটুনি পড়ে গেল নিচে,
গৃহস্থ দেখল না তারে যম বুঝি পিছে।

চড়াই দেখিয়া তারে করে হায় হায়!
টুনটুনি যে মরমর কী হবে উপায় ?
নিজ ঘরে নিয়ে এল টুনটুনিকে তারা,
ব্যথায় কাতর সে তো হয়ে জ্ঞানহারা।

সেবা আর খাদ্য দিয়ে বাঁচাইল জান,
টুনটুনি বাঁচিয়া গেল ফিরে পেল প্রাণ।
তখন হতে টুনটুনি চটক স্বজন,
এক ঘরে বসবাস হয়ে পরিজন।

মাস যায় সন যায় এক সাথে বাস,
চড়াই বলে টুনটুনি চলো আনি ঘাস,
একসাথে বাসাখানি করি ঠিকঠাক।
বরষা আসিলে যেন না থাকিবে ফাঁক।

সুখে দুখে গেল চলে পাঁচ-ছয় সন,
টুনটুনি কেমন জানি ভরে না তো মন,
পেয়েছে সঙ্গিনী বুঝি তাই উড়ি উড়ি!
থাকিবে কেন আর সে? পেয়েছে যে জুড়ি।

আনমনে চড়ুই ভাবে যাক যদি যায়,
গৃহকর্তা হয়ে কেউ অতিথি তাড়ায় ?
একদিন টুনটুনি বলে ওরে এই চড়া,
বাসা ঠিক করতে গিয়ে মুখে পড়ে কড়া।

তুমি মোরে দিয়ে শুধু কাজই করাও,
পেট ভরে কোনদিন মোরে না খাওয়াও।
নিজ স্বার্থ মোহে মোরে এনেছ আমায়,
নীচ তুমি শত ধিক জানাই তোমায়।