ভালোবাসার বনলতা
তিনটা মাস কেটে গেল। তোমার চিঠির উত্তর আজও পেলাম না। লোকে বলে আমার হৃদয়টা নাকী পাথরের মত শক্ত। কিন্তু আজ লিখতে বসতেই  কেঁদে ফেললাম। আকাশটা সময় ভুলে অসময়ে কেন কাঁদে জানো বনলতা? সে শীতও বোঝেনা গ্রীষ্মও বোঝেনা। যখনই বর্ষার কথা মনে পড়ে তখনই আকাশটা কেঁদে ফেলে। আজ তোমাকে আবার চিঠি লিখছি। সেদিন অনেক মন খারাপ হয়েছিল তোমাকে সব কিছু লিখতে পারিনি বলে । হঠাৎ করে দমকা বাতাস এসে বাতিটা নিভে দিয়েছিল। ঘরে দিয়াশলাইটাও ছিল না। ওসব কথা আজ থাক। অন্য একদিন বলা যাবে। তোমাকে বলেছিলাম না আমি গঙ্গা স্নানে যাব? মাস দুয়েক আগে আমি গঙ্গা স্নানে গিয়েছিলাম। গঙ্গার তীরে গিয়ে দেখি অসংখ্য মানুষ স্নান করছে। গঙ্গার জলে সবাই  পাঁপ ধুয়ে পবিত্র হচ্ছে। তখন আমি ভেবেছিলাম আমার পাঁপে পুরো গঙ্গার জলই অপবিত্র হয়ে যাবে। সেদিন গঙ্গা স্নান না করেই ঘরে ফিরেছিলাম। কিন্তু ঘরে ফিরেই আবার তোমার কথা মনে পড়েছিল। তাই সাত পাঁচ না ভেবে আবার বেরিয়ে পড়েছিলাম গঙ্গা স্নানের উদ্দেশ্যে। কিছু দুর যেতেই একটা  লরি এসে আমাকে ঢাক্কা দিল।  জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে। তখন ভাবলাম ভালোই তো! তোমার মত আমিও বন্দি হলাম। দুয়ে দুয়ে চার হয়ে গেল। ভাবছো আমার বন্দি জীবন কেমন কাটছে? তোমার জীবনের সাথে মিলিয়ে দেখ। আঁচ করতে পারবে। রাত দশটা বাঁজতে আর এক মিনিট বাকি আছে। কিছুক্ষন পরেই  হাসপাতালের ছোট্ট কেবিনে ওরা আঁধারকে ডেকে নিয়ে  আসবে। ভালো থেকো।
ইতি
বন্দি কুয়াশা