কবিতাকে যদি আমার স্বপ্ন বলি মিথ্যে বলা হবে না মোটেও। আমার চিত্ত যে কবিতার ফ্রেমে আবদ্ধ হয়ে আছে। আমার হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দন যে কবিতার ধমনিতে লাল রক্ত সঞ্চালন করছে অবিরত। আমি কোন অবস্থাতেই তো এই স্পন্দনকে থামাতে পারি না। আমার সে ক্ষমতা নেই। এটা কি আমার কোন দুর্বলতা? নাকি এটা আমার মহাশক্তি? যে শক্তি দিয়ে আমি বিশ্ব জয় করতে পারি! মহাকাশের ধ্রুবতারাকে ছিনিয়ে আনতে পারি! আমার হৃদয়ের গভীরে এই স্পন্দন এমনই কঠিন যে আমি তাকে উপড়ে ফেলতে তো পারি না। আমার হৃদয়ের নিগূঢ় অঞ্চলে যে কবিতার বাস। কবিতার ছবি যে আমার অন্তরে অন্তরীণ, তাই কবিতাকে আমি বলি আমার সেরা বাসনা।
আসল কথা হল নিবিড় বন্দনা, নৈসর্গিক বেদনা, চিন্তনে চেতনা, মানসলোকের জল্পনা---সব যে এরই মাঝে প্রতিফলিত। আর তাই কবিতাকে বলা যায় মানুষের সবরকম অনুভূতির এক শ্রেষ্ঠ বহিঃপ্রকাশ। বিশ্বনন্দিত মানবতাবোধের কথাগুলো আমরা কবিতাকে আশ্রয় করে বলার প্রয়াস পাই। শ্রেষ্ঠ উপাসনা বা হৃদয়ের গভীরের বেদনা আর আরাধনা কবিতাতেই সমুজ্জ্বল হয়ে ফুটে উঠে। ভগ্ন-হৃদয়ের আকুতি প্রকাশ করা যায় কবিতাতেই। মানবতার জয়গান করা যায় কবিতা দিয়েই। সুখের কথা, দুঃখের কথা অনায়াসে কবিতার পরতে পরতে ফুটিয়ে তোলা যায়। প্রেমিক-প্রেমিকার না-বলা কথা বলা যায় কেবল কবিতার মধ্যেই। এর চেয়ে আনন্দের, এর চেয়ে তৃপ্তির আর কিছু তো নেই। তাই কবিতা আমার স্বপ্ন। কবিতা আমার সাধনা।