"একজন বন্ধু কে নিয়ে লেখা সত্য ঘটনা।
কবিতা নয় শুধু মন প্রাণ ভরা সমবেদনা।"


অনেকদিন বয়ে গেছে ।
বন্ধুত্বের আদ্রতা,
কালের প্রকোপে,
কোথায় উধাও আজ ।

ব্যস্তময় পৃথিবী আর ব্যস্ত,
আমরা সবাই শুধু,
নিজেকে নিয়েই  অবিরত ।

ঠিক যেন, ------
কোন সুনামি প্লাবনে ভেসে গেছি,
পৃথক পৃথক দ্বীপপুঞ্জে ।
সারা পৃথিবীজুড়ে ।

তবুও স্মৃতিপটে অসংখ্য সুমন, সুজন ।
স্কুলে কলেজের একসময়ের বন্ধু ।

হটাৎ একদিন সামনে সুমন ।
আমার একসময়ের,
একদম কাছের বন্ধু ।

যত সহজে বললাম ।
ততটা সহজ মোটেও ছিলনা,
সেই মুলাকাত ।

ওকে চিনতে স্মৃতির সবগুলো
অনুভূতি কে একটিভ করেও দোদ্যোলুমান ছিলাম।

তবুও আবছা স্মৃতির,
হাত ধরে এগিয়ে গেলাম ।
বুকভোরে দীর্ঘ শ্বাস,

কীরে সুমন, কেমন.আছিস ?
আমকে চিনতে পারছিস তো ?
আমি কৃত্তিবাস ?

ওকে প্রথমবার,
এত লজ্জা পেতে দেখলাম ।

আঁচু কাঁচু মুখে, -----
ও কে কৃত্তিবাস !
না ঠিক চিনতে পারছি না ভাই ।

ভীষণ আবাক লাগলো ।
ওর  মিথ্যে বলার ধরনটাও
বুঝতে পেরেছিলাম ।
ও এড়িয়ে যেতে চাইল নানা আছিলায় ।

গাল ভোরে আছে,
আধা পাকা  খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি ।
ওকে দেখে নিজেকে,
সমবয়সী হিসেবে,
ঠিক মেলাতে পারছিলাম না ।

বন্ধুত্বের শিহরণ শিরায় উপশিরায় ।
তবুও আশঙ্কা ছিল অনুভূতি জুড়ে ।
এইকী সুমন ?

না আর হ্যাঁর মাঝে কোথাও যেন
একটা আত্মবিশ্বাস ।
এ সুমন ছাড়া আর কেউ,
হতেই পারেনা ।

কিরে রসিকতা ?
তুই বুঝি বদ্লালি না ।
ছাড় আর নয়, অনেক হলো ।
বল কেমন আছিস ?

ওর দুচোখ ভোরে,
শুধু শ্র।বণের ধারা ।

আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না ।
তাহলে কী আমি জোর করে ওকে
আমার সুমন ভাবছি ?

সরকারী চাকুরীজীবী আমি।
আঁটো -সাঁটো প্যান্ট শার্ট ।
গায়ে ভদ্রতার ছাপ বেশ গাঢ় ।

ভাবলাম ঘাট হয়েছে ।
ও সুমন হোক বা অন্যকেউ,
অযথা বাক্যবিনিময় ।

আমি লজ্জায় ইতস্তত বোধ করছিলাম ।
অপেক্ষায় ছিলাম কেমন এড়িয়ে যাই ।
বেশ কিছু সময় উভয়ে নিস্তব্ধ ।

হটাৎ, -------
তুই ঠিক চিনেছিস ।
আমি সুমন ।

আসলে চোখের জলকে,
আটকাতে পারলাম না ।
তাই একটু ------- ।

আসলে কী জানিস,
আমার বেকারত্বের আর
একাকীত্বের এতগুলো বছরে,
যাকে চিনতে পেরে জানতে চেয়েছি
ওরা সবাই না চেনার অভিনয় করেছে ।

হেরেছি বারংবার বন্ধুত্বের কাছে ।
ভীষণ কষ্ট পেয়েছি বার বার ।
সামলেছি নিজেকে সব বার ।

তাই বেকার এই আমার
থাকা না থাকার খোঁজ কে নেয় বল ?

তাই একটূ আবেগে, --------- ।
যাক, তুই কেমন আছিস ?

আমি বাকরুদ্ধ ।
আমার পায়ের নিচে মাটিগুলো যেন
সরে সরে যাচ্ছিল ।

কিছু বলার অপেক্ষা না করে,
জানি তোর ও হাজার ব্যস্ততা ।
সময় নষ্ট করিস না ।
আসছি ।

সুমন এগিয়ে চলল নিজের পথে ।
নিস্তব্ধ, নির্বাক আমি দাঁড়িয়ে পথের
বাঁকে ।

নিজেকে মেলাতে পারিনি আজও ।
ভাবি, যদি দুজনের জায়গাটা ঠিক
বিপরীত হতো ।

কী উত্তর দিতাম ?
যদি সুমন আমাকে বলতো,
কেমন আছিস ?

কৃত্তিবাস
কঙ্গো, 25 Aug 2017