পুরুষ--চেনামুখ হল মনে জুড়ে যাওয়া, তাই-
বন্ধু ডাকি স্বাগত জানাই ।
নারী--শুভ সন্ধ্যা, আজ তপ্ত গ্রীষ্ম,
কে আপনি ?চিত্রিত যেন ভীষ্ম !
পুরুষ--আমি পথ ভোলা এক পথিক
আলোর খোঁজে বেড়াই ছুটে
দেশ বিদেশ দিকদিক ।
তুমি কেগো কণ্যে?
নারী--আমি? আমি অতি সাধারণ্যে,
রাঁধি-বাড়ি, চুল বাঁধি,
হাসি গাই
খোলা আকাশে স্বপ্ন সাজাই ।
পুরুষ--বাঃ বাঃ,বেশ বেশ,
জীবন তোমার সহর্ষ আবেশ।
নারী--তা বটে, জীবনের কাছে বড় কম প্রার্থনা,
অতৃপ্তির পরিহাস তাই নেই জানা ।
আপনার কথা
যথা তথা
মন আকাশে
ভিড় করে আসে,
ফুটুক কিছু নতুন তারা এই অবকাশে ।
পুরুষ--আমিও তোমার মত স্বপ্ন রচে যাই,
কিছু মুঠো ভরা আনন্দে কথা সাজাই,
তবে তা অন্যের জন্য ,নিজের জন্য নাই।
নারী--কেমন মানুষ তা বুঝিনা বড়,
বাসনার ঘরে কেন এত শূণ্য জড় ?
পুরুষ--তা ভালো বলেছ কন্যে, খুব কি বই পড়ো?
নারী--বই যে আমার নিত্যকালের, মেয়েবেলার সই।
পুরুষ--এখন পড়ছ বল কী বই?
নারী--এখন যেটা পড়ছি আমি
অনুভবের সমুদ্রে নামি
ভিজিয়ে দিল বুক আমার
ভিজিয়ে দিল প্রাণ,
অন্ধকারের গভীর হতে
আনছে তুলে স্বর্ণরথে
বেঁচে থাকার গান ।
পুরুষ--এইতো সাধন বালিকে
পড়বে যত বাড়বে তত
জীবন বোধের তালিকে।
নারী--হায়! বালিকে হতাম যদি
উড়ে যেতাম নিরবধি;
দূর দিগন্তে পাখনা মেলে,
কিন্তু সে এগিয়ে সময়
আজ স্থিতধী চুপ করে রয়,
হারিয়ে গেছে মেয়েবেলা
কখন অবহেলে।
পুরুষ--কিন্তু আজও বুকের ভিতর
নেই জেগে সে নিশাচর?
ঘুমের মাঝে স্বপ্নে দেগে
বালিকা বয়স ওঠে না জেগে?
নারী--তা থাকে যদি লুকানো সে
কেমনে দেখাই অনায়াসে?
পুরুষ--যায় বইকী ,তবে কেমনে শুনি অনুরণন ?
নারী--তাই বুঝি? কখন পেলেন সে মনন?
পুরুষ—চল, যাবে আমার সাথে?
নারী--কোথায় যাব এত রাতে?
পুরুষ--রাত তো নয় বেশি নন্দিনী
ওই দূরে প্রবাহিত মন্দাকিনী
ওরই পাড়ে বসে কিছুকাল নিশ্চুপ
জীবন নদী স্রোত হেরিব তার রূপ।
নারী--আপনি চলুন ,আছি আমি সাথে সাথে,
দেখি নতুন সূর্যের ভোর কী বার্তা আনে প্রাতে;
কী রঙে রাঙায় আকাশ;
কী মন্ত্র দেয় বাতাস;
কী গন্ধে মাতয়ারা;
প্রানের কুলে জাগায় সাড়া।
অপনি চলুন-
আছি সাথে অনুক্ষণ ।
পুরুষ --তবে তাই হোক;
তুমি আমি দেখি চন্দ্রালোক-
অস্ফুট জ্যোৎস্নার ধারা বারিষণ ।
কালের সৈকতে অনোনুভূত প্রহর যাপন।
নারী--আজি এ মধ্যযাম
স্স্নিগ্ধ মমতায় একি সম্ভ্রম!
অনাস্বাদিত আনন্দ ধারা!
তাই কী নদী পাগলপারা?
পুরুষ--সুবাতাসে শ্বাস হোক গভীর সঞ্চারী!
নারী--আপনার হাতটা একটু ধরি?
পুরুষ--তোমার মাথায় রাখলাম হাত স্থির ভাবে।
নারী--আঃ বড় শান্তি, বড় শীতলতা এই অনুভবে!
কে তুমি? তুমি কী নও নর?
তুমি কী ঈশ্বর?
পুরুষ--ঈশ্বর একটি বোধ,অপূর্ব অভিলাষা,
যেমন আনন্দ, যেমন দুঃখ,
যেমন অনাবিল ভালবাসা।
তুমিও ঈশ্বর এই মুহূর্তে উদ্ভাস
যখন তোমার বোধে ইতির আবাস।
নেতি কলুষ লোভের নিরসন
এমন করেই তো জীবন যাপন!
নারী--তুমি যেন মেঘের মত
ভাবছি তোমায় দিচ্ছি ছুঁয়ে
ভিজতে ভিজতে মনে,
কিন্তু তুমি চলায় রত
দূরত্ব অকারণে।
পুরুষ--বেশ তো কণ্যে, যে জীবনটি তোমার চারিপাশে
কোলাহল সর্বক্ষণ
তাকে আত্মস্থ করে চলাই জীবন ।
নারী--যদি দিই ছুঁয়ে
কী ক্ষতি তায়?
আমি কী তোমায় বেঁধে রাখব?
মেঘ কে কি বেঁধে রাখা যায়?
পুরুষ--স্পর্শ তো এক অনুভব মাত্র, অনুরোধ
ঈশ্বর কর বিশ্বাস ।
তাঁর প্রতি বিশ্বাস একটি বোধ
এই বন্ধুতাতেও তারই আশ্বাস ।
নারী--সুপ্রভাত! কাটল আঁধার কালো।
তোমার সাথে ভোর হল
আনন্দ জগৎ আলোয় আলো ।
তোমার কথা শুনতে শুনতে
যেন কোন সাগর পাড়ে-
একে একে বাতি স্তম্ভ হয়ে যাই পার।
কখন রাত ভোর হল হিসেব রাখিনি তার ।
পুরুষ--এটাই জীবন ভালোতে বাস,
ভালোবাসা আর নয় কিছু
শুধু ভালো থাকার আবাস।
নারী--তবে তাই হোক, আজ হতে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাব
যত আনন্দ বিন্দু,
নিযুত প্রদীপের আলোক প্রেক্ষণ
হোক পীণন;
তটরেখা ধরি এ জীবন সিন্ধু।
পুরুষ--তাই হোক ,তবে তাই হোক ।
এ জীবন আলোকিত হোক
অসীম গভীর বোধে,
আমিত্ব নাশী দুহাত ধরি
এগিয়ে যাওয়া আরদ্ধে ।
নারী-- তাই হোক, তবে তাই হোক।।
===========