গুন্ডা আমি দুস্টু ছেলে বড্ড ডানপিটে,
কোথাও কাটা, কোথাও ছেঁড়া ,কোথাও বা কালসিটে।
পড়াশোনার বালাই নেই শুধুই করি খেলা ।
মা মরেছে জন্ম দিতে বাপের স্নেহে তালা।
ভাল্লাগে না ইসকুল,পড়তে মোটা বই,
মারে মারুক বাবা যতই পিঠ পেতে তা সই।
বাবার এতো রাগ কেন, কেন যে এত রোখ!
ঠাম্মা আমার বড্ড ভালো, লুকিয়ে মোছে চোখ।
অসুখ হলে মাথার ধারে জেগে সারা রাত,
আঁধার কালো কাটিয়ে দিয়ে কখন সুপ্রভাত ।
সারাটি দিন ঘুড়ি লাটাই মেঘের সাথে জুড়ি,
বুকের মাঝে কালবৈশাখী ‘ভোকাট্টা’য় উড়ি।
উড়ন্ত ওই পাখিরা সব আমার মনের সাথী;
নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে জোয়ার ঢেউএ মাতি ।
ধানের খেত সবুজ সাগর বড্ড যেন প্রাণ;
খালি পায়ে ছুটে বেড়াই সবুজ আলোয় স্নান।
গাছে গাছে চড়ে বেড়াই স্বর্ণঝুরির দোল,
মৌমাছিরা ঘুম ভাঙ্গিয়ে আমের গাছে বোল।
চড়তে বনে চোখ টেনে নেয় হাজার বুনো ফুল ।
কাশের বনে উথাল পাথাল একলা ফিরি বাউল ।
ঝাঁকড়া চুলে কাকের বাসা কাদা পা খালি,
জামার বোতাম কোথায় হাফিস চোখের নিচে কালি ।
দিগন্তেরই তল ঘেঁসে যে তাল গাছের ওই সারি-
বাবুই বাসার সাথে সেথা আমার দোলাও জারি ।
এসব ছেড়ে ভাল্লাগে না বন্দি ইসকুল,
মাস্টারেরা কথায় কথায় পিঠে ভাঙ্গে রুল ।
তাইতো পালাই ছুটে ফিরি আপন মনে মাঠে,
গাঙ শালিকের দলে ভিড়ি যখন সূর্য পাটে ।
হাওয়ায় যেন মায়ের পরশ জড়িয়ে সারাক্ষণ,
কেমন হবে আমিও যদি হারাই অকারণ !
সন্ধ্যাবেলা পুকুর পাড়ে লক্ষ জোনাকি,
নিভছে জ্বলছে আমার মনে মাকে ডাকাডাকি।
রাতের আকাশ এত তারা কোনটা আমার মা?
বুকের ভেতর রক্ত ঝরে কেউ তা জানে না।
মাগো আমি একলা বড় আমার কাছে এস-
যত দূরেই থাক তুমি আমায় ভালোবেসো।।
---------------