আমার জানামতে আলোচনার পাতায় সবচেয়ে সাড়া জাগানো পোস্ট - বাংলাদেশ ইন্ডিয়াসহ সারাবিশ্বকে উত্সর্গ - ড. শাহানারা মশিউরের কাছ থেকে ৬/১৩/২০১৯ তারিখে, যার মূল বক্তব্য ছিল প্রতিবন্ধী শিশুদের ব্যাপারে কিছু করা।
পোস্টটিতে ৫০ জনেরও বেশী কবি নীতিগতভাবে সমর্থন জানান ও উত্সাহমূলক মন্তব্য দেন। কিছু কবি একাধিক কবিতা মন্তব্যের ঘরেই পোস্ট করে দেন। আমার মন্তব্য ছিল অতি সংক্ষিপ্ত ও কৃপণ - জানতে চেয়েছিলাম উদ্দেশ্য কী শুধুই প্রকাশনার মাধ্যমে গণসচেতনা তৈরী করা না পাশাপাশি কিছু আর্থিক সাহায্যেরও চিন্তা-ভাবনা ও ব্যবস্থা করা যায়। যদিও এরকম ব্যাপারে কারো মন্তব্য, উত্সাহ এবং অবদান কোনটিই নগন্য নয়, তবুও আমার ভিজ্ঞতায় মনে হয়েছিল ক্ষুধার্ত মানুষের সামনে কিছু খাদ্য হাতে না গেলে সম্মান বা সহানুভূতি কোনটিই পরিপূর্ণ হয় না। যাই হোক, এই আর্থিক ব্যাপারের আলোচনাটা এরপর বেশ কিছু মন্তব্যেই আসে। এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত ও আশাব্যাঞ্জক কার্যকরী পরিকল্পনার মন্তব্য আসে কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল ও কবি সরদার আরিফ উদ্দীনের কাছ থেকে (এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ) । এরপর ১১/০৩/২০১৯ তারিখে একটা ইমেল পাই কবি অনিরুদ্ধ বুলবুলের কাছ থেকে এ ব্যাপারে আমার কিছু চিন্তা-ভাবনা জানানোর জন্যে, যা কপি করা হয় ড. শাহানারা, সরদার আরিফ উদ্দীন ও বাংলা কবিতার এডমিন আশফাকুর রহমান পল্লবকে। অত্যন্ত ব্যস্ততার মাঝেও কাজটির গুরুত্ব অনুভব করে আমি বিক্ষিপ্ত কিছু রূপরেখা পাঠায় ১২/০৩/২০১৯ তারিখে, এবং ১৮/০৩/২০১৯ তারিখে এডমিন আশাফাকুর রহমান পল্লবের কাছ থেকে ইমেল আসে বাংলা কবিতার পক্ষ থেকে নীতিগতভাবে সমর্থন দিয়ে এবং কার্যকরী করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়ে। দুই বাংলার কবি সম্মেলনের প্রস্তুতিতে এরপর কিছু সময় এই বিষয়টির উপর আর কোন আলাপ আলোচনা দেখিনি। কবিতা সম্মেলনে এডমিন মহোদয়ের বক্তব্যে আবার বিষয়টি সম্পর্কে ভাবার যে আহবান দেখলাম, তা থেকে অনুধাবন করলাম এডমিন মহোদয় বিষয়টিকে শুধু কথায় নয় হৃদয়ে ধারণ করেছেন। এর সূত্র ধরেই আলোচনার পাতায় আবার দেখলাম কবি অনিরুদ্ধ বুলবুলের আহবান বিষয়টি নিয়ে ভাবার জন্যে ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্যে।
আমি আশা রাখি কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল অতি শীঘ্রই এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত একটি পোস্ট দেবেন। সুতরাং আমি খুব বিস্তারিত লেখা থেকে বিরত থেকে সংক্ষেপে কিছু প্রস্তাব রাখলাম আরও আলোচনা ও ভেবে দেখার জন্যেঃ
১। প্রতিবন্ধী বান্ধব নামে বার্ষিক একটি প্রকাশনা চালাতে হবে যাতে কবিতা, প্রবন্ধ, সাক্ষাতকার, গল্প, সবই থাকতে পারে।
২। এই প্রকাশনা উপলক্ষে প্রতিবছর ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক কবি/কবিতা সম্মেলন ফেব্রুয়ারী মাসে বইমেলা চলাকালীন সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
৩। সম্মেলনটির পূর্বে প্রতিবছরেই বাংলা-কবিতার মাধ্যমে ও কিছু ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক অনুদান সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সম্মেলনের কিছু সময় প্রতিবন্ধীদের জন্যে বরাদ্দ করে তাদের ও তাদের তদারককারী সংস্থার উপস্থিতিতে সংহীত অর্থ অথবা সরঞ্জামাদি তাদের হাতে তুলে দেওয়া যায়।
৪। যথাযথ সরকারী কর্তৃপক্ষকে এই কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রাখা বিবেচনা করা যায়।
৫। এই সম্মেলন ও প্রতিবন্ধী সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রচার মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচারের দরকার আছে বলে আমি মনে।
৬। সম্মেলনটি ২-দিনব্যাপী চিন্তা করা যেতে পারে, যাতে প্রতিবন্ধী সঙ্ক্রান্ত অতীত কাজের পর্যালোচলনা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার জন্যে সময় বরাদ্দ করা সম্ভব হয়।
৭। প্রকাশনাটির কিছু ইংরেজি অনুবাদও করা যায় কিনা ভাবা যেতে পারে। এটি সম্ভব হলে (কমপক্ষে যদি কিছু নির্বাচিত লেখা ও ব্রসিউর ইংরেজিতে করা যায়) বিদেশে এ সঙ্ক্রান্ত প্রচার ও অর্থ সংগ্রহ অত্যন্ত সহজ হয়।
যাই হোক, আমার মূল বক্তব্য হলো প্রতিবন্ধী কল্যান, প্রকাশনা এবং সম্মেলন এগুলি যৌথভাবে একটা বার্ষিক অনুষ্ঠানের যে আইডিয়া এটি যদি গ্রহণযোগ্য মনে হয়ে, তাহলে তা কার্যকরী করার বিভিন্ন আলাপ আলোচনা স্বাভাবিকভাবেই হবে।
সকলের প্রতি শুভেচ্ছা রইল।