রান্নার প্রোগ্রাম দেখে টেলিভিশনে
অদুরেই রান্না ঘরে পত্নী তার রাঁধে
পিয়াজ আর রসুনের ঝাজে চোখ কাঁদে
পত্নী ডাকে, “শুনছো গো? এসোনা এ দিকে
বাসন কটা ধুয়ে দাও, দেখনা চুলাটিকে।”
পতি বলে, “দেখছোনা আমি এখন ব্যস্ত
এসময় রাখো তোমার রান্নার খ্যাস্ত।”
হঠাত চড়া ভাব পত্নীর মেজাজে
"বল তুমি সংসারের লাগো কোন কাজে?
যাও শুধু পাঁচ দিন কি আমার অফিসে
বাকিটা সময় তোমার যায় বলো কিসে?
দেখো তো টেলিভিশন, সিনেমা, খেলা
খেতে চাও যেই হয় খাবার বেলা
খাওনা কেন যে খাবার দেখো টেলিভিশনে?
তোমার মত অকেজো দেখিনি এ জীবনে।”
বিরক্ত পতি বলে রাগ আর শ্লেষে
"এই যে তোমাকে নিয়ে এলাম এ দেশে
বলতো পেরেছে তা ক'জনের স্বামী?
তোমার কাছে পেলাম না একটু দাম আমি।
সেই তো কর ছাই ভারী ক'টা রান্না
তাই নিয়ে প্রতিদিন এত কেন কান্না?”
পত্নীর চোখে জল, রাগে গাল রাঙা
গলা ধরে আসে তার কথা ভাঙা, ভাঙা
"এনেছিলে এই দেশে বানাতে তো দাসী
আগে জানলে ভুলেও কি এই দেশে আসি?
বাবা, মা নেই কাছে, নেই চাকরানী
একা একা টেনে চলি সংসারের ঘানি
নিজ হাতে সব করি, নিজ হাতে রাঁধি
হয়ে গেছি তোমার আর সন্তানদের বাঁদী।
মাঝে মাঝে চাই কটি শাড়ী আর গয়না
অল্প বেতন পাও, তাই নাকি হয় না।
আমার এই জায়গায় অন্য কেউ হলে
দেখতে তোমার জীবন, যেতো কেমন জ্বলে।”
অনেক ভেবে পতি বলে, “ওগো প্রিয়তমা
আমার যত ভালবাসা তোমার তরে জমা
তোমার কথা মানছি, আমি আমড়া কাঠের ঢেঁকি
দোহাই তোমার বলো না মোর ভালবাসা মেকি।
পকেট দু'টো হোক না ফাকা, হৃদয় শাহজাহান
তাজমহলের নও মমতাজ, তুমি আমার জান।
তোমার তরে জীবন ভরে করে যাব সেবা
তুমি ছাড়া এ জীবনে আছে আমার কে বা?”
পত্নী বলে, “ভিজে বেড়াল আর সেজনা সাধু
ঢের শুনেছি মিঠে কথার মিছে ভরা যাদু
সেই যাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ বলেছিলাম কবুল
সেদিন কি আর বুঝেছিলাম কত বড় ভুল!”
পতি বলে, “পাপী আমি দাও গো তুমি সাজা”
পত্নী বলে, “কি যে বল? তুমি আমার রাজা।”
রাজা বলে, “কাছে এসো ওগো আমার রানী”
রানী বলে, “এই দুরে যাও, তোমার এখন দুষ্টামি সব জানি।”