জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে শেষে নবী এলো মদীনায়
মদীনাতে মুসলমানের খুশীর সীমা তাই তো নাই।
সবাই জানে এদিন রবে ইতিহাসে মহান তিথি
তাই সবে চায় নবীজি হোক তাঁর ঘরে অতিথি।
কারে দেবে সুখ নবীজি, কার বা দুখের বিনিময়ে?
তাই তো বলে, আমার গাধা বাছুক তবে আমার হয়ে।
সৌভাগ্য লেখা ছিল আবু-আইয়ুব আনসারি-নামে
তাঁর ঘরে হয় রাত্রি যাপন গাধা যখন সেথায় থামে।
মক্কা থেকে মদীনাতে মোহাম্মদের এই যে আসা
হিজরত নামে খ্যাত করে আরব দেশের আরবী ভাষা।
সেদিন থেকে শুরু হল হিজরী নামে বছর গোনা
মুসলমানের পঞ্জিকা যা, বিশ্বে মানে সর্বজনা।
মদীনাতে এসেই নবী বানায় প্রথম মসজিদ
প্রকাশ্য আযানে দিল সবে নামাজ পড়ার তাগিদ।
শিক্ষা-দীক্ষা আর মানুষের যত মঙ্গল কাজ
মসজিদ হল কেন্দ্র তাঁর, গড়তে নতুন সমাজ।
ইসলামকে ধর্ম মেনে যারা আসলো মক্কা ছেড়ে
সম্পদ যা ছিল তাদের নিয়েছে তা কুরাইশরা কেড়ে।
শূন্য হাতে নতুন দেশে হল তারা মুহাজিরীন
কেমন করে বাঁচবে তারা আশ্রয় ও সাহায্যহীন?
তাই নবীজি বানালো সব মদীনাতে আশ্রয়দাতা -
আনসার নামে খ্যাতি দিয়ে মুহাজিরীনদের ভ্রাতা।
আপন ভাইয়ের মতই তারা দেখালো প্রেম-অনুরাগ
নিজের বাড়ি ধন-সম্পদ করে দিল সমান ভাগ।
মদীনাতে ছিল তখন গোত্রে গোত্রে নিত্য বিরোধ
খুন হলে কেউ এক গোত্রে, খুনই ছিল তার প্রতিশোধ।
তাই তো সবার মনের আশা সুখ-শান্তি আসুক সেথা
সব গোত্র মানলো তাতে মোহাম্মদ হোক নতুন নেতা।
যে এসেছে ধরার বুকে হয়ে সবার রহমত
বানালো সে মদীনা-সনদ, সবার যাতে সহমত।
ঐশী ধর্মের ইহুদী-খ্রীষ্টান-মুসলমানের মদীনায়
সবাই নিজের ধর্ম করার স্বাধীনতা যেন পায়।
মদীনাকে করবে যারা বাইরে থেকে আক্রমন
এমন কারো হবে নাকো মদীনাতে কেউ আপন।
এই মদীনার বাসিন্দারা হাত মিলিয়ে একহাতে
আগ্রাসীকে প্রতিহত করবে তখন একসাথে।
পৌত্তলিক-ধার্মিকেরা ছিল যোগ্য-নেতাহীন
অন্য গোত্রের নির্যাতনই সইতো তারা এতোদিন।
মোহাম্মদের ডাকে তারা ইসলাম ধর্ম করে গ্রহণ
আওজ গোত্রের নেতা সা'দ ও তার সাথে বহুজন।
মোহাম্মদের সদিচ্ছা যা ছিল ইহুদীদের প্রতি
ব্যর্থ হল পেতে তাদের – আসলো বরং বাধা অতি।
ইহুদীদের পন্ডিতেরা করলো তাঁরে নিঠুর বিদ্রূপ
নির্যাতন ও বাধা বাড়ে মোহাম্মদকে করতে নিশ্চুপ।
তাদের গ্রন্থেই খবর ছিল একজন শেষনবী আসার
মোহাম্মদই সেই শেষ নবী, করলো তারা অস্বীকার।
তাদের গোত্রে না এসে সে, এল মক্কার কোরাইশে,
জেনে বুঝেও মরল তারা সেই না মনের হিংসা-বিষে।