বিবাহ-যোগ্যা কন্যা ঘরে দিতে হবে তার বিয়ে
নির্ঘুম রাত কেটে যায় তার বাবা-মা'র এই নিয়ে।
পাত্র আসে বাবা-মা সাথে, বন্ধু ও পাড়ার ছেলে
লজ্জানত সাজানো কন্যা দেখে সবে চোখ মেলে।
সেই যেন শুধু দেখার জিনিস, দেখবে না সে কারেও
ছেলেটি কখনো চাই না জানিতে পছন্দ কি তারেও।
লজ্জাবিহীন সবাই মিলে দিয়ে যাবে শেষে রায়
একটু কালো মেয়েটি তাদের পছন্দ হয় নাই।
এমনি করে কতবার এই একই কথা শুনে শুনে
নিজেরই প্রতি বীতশ্রদ্ধায় বেঁচে থাকে দিন গুনে।
স্রষ্টার গড়া সৃষ্টির সেরা মনোহর সুন্দর
নিজেরে বড়ই কুৎসিত ভাবে, মরে যাই অন্তর।
একদিন যারে কোলে উঠাইয়া, পিতা ও মাতার বুকে
প্রেমানন্দের বান ডেকেছিল পৃথিবী জয়ের সুখে
সেথা উঠে আজ পৃথিবী কাঁপানো কাল বোশেখীর ঝড়
শ্রাবন ধারায় অবিরাম কাঁদে ভগ্ন তিন অন্তর।
হায় অভাগা নির্বোধ ছেলে, হৃদয়হীন-গরু-গাঁধা!
সুন্দরী মানে বুঝলি শুধুই চামড়ার রং সাদা।
তাই যদি হতো শ্বেতাঙ্গিনীরা পুড়িত না সদা ধ্যানে
একটু কৃষ্ণ হওয়ার তরে সূর্য-তাপ ও ট্যানে।
যতদিন তোর কুৎসিত মন রয়ে যাবে তোর সনে
তোর চেয়ে বল কালো-কুৎসিত বলি আর কোনজনে?
মনটা যেদিন সুন্দর হবে দেখবি সেদিন চেয়ে
কালো মেয়েদের আলোয় কেমন জগৎ গিয়েছে ছেয়ে।
ওরে! পুরুষ হ আজ উচ্চ কণ্ঠে তোর বাবা-মা’কে বলে
মেয়ে কালো বলে বিয়ে করিব না সেদিন গিয়েছে চলে।
ওরে কালো মেয়ে! মাথা উঁচু করে বল আজ উঁচু স্বরে
বাঙালী চামড়ার আদিরূপ আজও আমরা রেখেছি ধরে।
তোদের চাওয়াই সেই রূপ বল কেন দিই জলাঞ্জলী
তার চেয়ে রবো চিরকুমারী, তোদেরকে দেব বলি।
রচনা: ২৬ আগস্ট, ২০১৬