সারাটা বিকেল রেশন লাইনে, পাবো একসের চাউল
সন্ধ্যা বেলায় চা’ল শেষ হ’লে ভাঙিল মনের ভূল।
মায়ের বুকে মুখটি লুকায়ে ডুকরে উঠিনু কেঁদে
পাইনিকো চা’ল, বলো মা দেবে কি দিয়ে ভাত রেঁধে?
কাঁদিসনে খোকা, কেউ মরে নাকো একরাত ভাত ছাড়া
ক্ষুধার সময় না খেলে দেখবি হয়ে যাবি ক্ষুধা-হারা।
মায়ের কথায় শিখেছিনু তাই কিভাবে বাঁচিতে হয়
দু’মুঠো খেয়ে কিংবা না পেয়ে যখন ক্ষুধার সময়।
বাবার কথায় শিখেছিনু আরও শুধু দুই মুঠো খেয়ে
কিভাবে শোকর জানাতে হবে আল্লাহর গুণ গেয়ে।
কষ্টে কভু ভূল করে তবু কখনো যেন না খাই
অন্যের যাহা, পর ধন আর অসৎ পথের আয়।
পদে পদে যেথা পঙ্কিলতা, অসৎ দেখায় ত্রাসন
সৎপথে পাওয়া দু’মুঠো ভাত সেথা যে কঠিন ভাষণ!
জীবন যুদ্ধে দেশ ছেড়ে তাই ঘুরি এ দেশান্তরে
বিলাসিতা নয়, দু’বেলা শুধু দু’মুঠো ভাতের তরে।
যখনই বাড়ে থালাটাই মোর আরও দুই মুঠো ভাত
মনে ভেসে ওঠে আর একটি মুখ, একটি শূন্য হাত।
জীবন রবি অস্তাচলে, তবু ঘুরি হয়ে হন্যে
এবাদত নয়, শুধু কেঁদে চলি দু’মুঠো ভাতের জন্যে।
কাল যদি শেষ বিচার দিনে প্রভু তুমি করো দাবী
দু’মুঠো ভাত তো তোমার দেওয়া, কি জবাব দেব ভাবি!
আমি শুধু জানি ধরণীর 'পরে দু’মুঠো ভাতের দাম
যন্ত্রনাময় দীর্ঘ জীবন, সৎ পথ যদি নাম।
সেই পথে হেঁটে পূণ্য কিছুই পারিনিকো প্রভু আনতে
দু’মুঠো ভাতের বেশি সেদিন চেয়োনা কিছুই জানতে।
রচনা: ৩০ জুলাই, ২০১৬; হো চি মিন সিটি, ভিয়েতনাম|