আজিকে বিশ্ব চেতনা-নিঃস্ব, শেকড় খেয়েছে ঘুনে
সত্যের নামে শত অসত্য, কত যাবে আর গুনে?
শালীনতা আজ হীনতায় কাঁদে আচারে মিশেছে বিষ
দোয়েল মরেছে কণ্ঠে ধরেছে চিল শকুনীতে শিস।
দেব দেবীগণ ভ্রষ্টা বেভুল, অসুর হয়েছে দেবক
সেবকেরা আজ দুস্থ-আর্ত, বণিক সেজেছে সেবক।
অধার্মিক আজ ধার্মিক সাজে, সাধু আজ অধার্মিক
সত্যের যত খুনীরা আজিকে সেজেছে সত্য-সৈনিক।
সত্য-ন্যায়ের পুস্তক আজ হয়েছে উইয়ের ঢিবি
সুবিধাবাদীরা বুদ্ধি বেচিয়া সনদী বুদ্ধিজীবী।
অযোগ্যেরা বিদ্যাপীঠে সেজেছে শিক্ষাগুরু
যেখানে আজিকে ভৃত্যবৃত্তির শিক্ষা হয়েছে শুরু।
নীতিহীনগন রাজনীতি শিখে হয়ে যায় দেশে নেতা
বোঝে না মানুষ, বোঝে না সমাজ, বোঝে ক্ষমতার জেতা।
অর্থবল আর অস্ত্রবল আজ সাংসদী যোগ্যতা
জনগণের যা তারা ভাবে সব নিজেদের ভোগ্য তা।
যে সব নীতির শপথে বিপথে নেতা ক্ষমতায় আসে
অচিরে নেতার শপথের নীতি নর্দমাতেই ভাসে।
সহে না নেতা সত্যিকথা, সহে না স্বাধীন চিত্ত
বিচারের নামে বিচারক আজ অবিচার করে নিত্য।
স্বাধীনতা আজ ব্যবসার পুঁজি রক্তে ছিল যা অর্জন
শুধু তা নিজেই রাখার জন্যে অন্যেরে দেয় গর্জন।
ইতিহাস আজ নিছক গল্প, গল্প সত্যি ইতিহাস
বন্য পশুর মুক্তি-শ্লোগান, মানুষ হয়েছে ক্রীতদাস।
যুগে যুগে নর নারীকে দিলো নিষ্ঠুর অবহেলা
রাগ, অভিমানে নারী ভাবে আজ ঋণ আদায়ের বেলা।
নারী মুক্তির দাবী নিয়ে তাই নারী দুর্বার, বন্য
বণিক নর ও নারীর হাতে অজান্তে হয় পণ্য।
নব্য ফ্যাশনে বিলাস ব্যাসনে সভ্য-স্বাধীন হাসে
বস্ত্রবিহীন অনাহারী জন আবাসহীন পথ-পাশে।
পশুর মতোই মানুষ মরে, চারিদিকে হাহাকার
বিশ্ব-বিবেক হুংকার ছাড়ে রক্ষিতে মানবাধিকার।
নারী ও পুরুষ হাজারভাবে সমাজে নির্যাতিত
বিভ্রান্তিতে প্রতিবাদ আজ ভুলের লক্ষ্যে স্থিত।
ক্ষমতাবানেরা অর্ধচেতন অথবা চেতন-হারা
জাগাতে তাদের নিত্য হাজার দেশে দেশে যায় মারা।
মানবতা আজ প্রতি পদে পদে কেঁদে কেঁদে হয়রান
অট্টহাসিতে হাসে দিকে দিকে উলঙ্গ শয়তান।
আসুক এখন দুর্বার বেগে আসুক ঘূর্ণিঝড়
চূর্ণ করে যাক জীর্ণ-জ্বরা, দুর্বল, নড়বড়।
ধূলিকণা যাক শূন্যে উড়ে ঘূর্ণিঝড়ের পাঁকে
হালকা যা, তা হাওয়ায় উড়ুক, কদিন মাটিতে থাকে?
চেতনাহীন বা অর্ধচেতন যাক শশ্মান বা কবরে
ভন্ড-ধার্মিক, ভন্ড-নেতারা আসুক মরার খবরে।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র দিয়ে সূর্যের ছটা এসে
আঁধার কেটে ধরণীর বুক যাক না আলোয় ভেসে।
সত্য-ন্যায়ের কান্ডারী এক হবে হবে আগুয়ান
শয়তান নয়, দিকে দিকে হবে মানুষের জয়গান।