বাংলার নারী-শ্রম পাওয়া যায় সস্তায়
যত চাও দিতে পারো কাঁখে তার বস্তায় -
ধান, গম, আটা, চাল, পাথরের বোঝা
বাঁকা দেহে টেনে যাবে, হবে নাকো সোজা।
মাংসহীন হাতে ভাঙে প্রাসাদের ইট
ছিন্ন শাড়ির ফাঁকে পোড়ে তার পিট।
নারী খাটে ধান থেকে চাল করা যন্ত্রে
রোদে পুড়ে ক'টি চাল জুটানোর মন্ত্রে।
কারখানার অন্ধকার যে জীবন ঢাকে
সে সাজায় জগৎকে সভ্যতার পোশাকে।
নারীশ্রমিক সাজে না আজ কঙ্কন-নূপুরে
ওরা মাটি কাটে, মাটি বয় চৈত্রের দুপুরে।
শীর্ণ দেহের মাথায় ভার, তবু সোজা হয়ে
জঠরে আগত বংশধরের ভার যায় বয়ে।
ওরা যায় স্বপ্নচোখে মধ্যপ্রাচ্যে সস্তায়
যৌন-দাসী হয়ে শেষে আজীবন পস্তায়।
ঘর্মাক্ত দেহে নেই সুবাস, নেই পেলবতা
সন্তানের তরে সঞ্চয় শুধু বুকের শুষ্কতা।
তার কিছু চেটে খায় নির্লজ্জ বেহায়ায়
তদারককারী হয়ে যারা থাকে ছায়ায়।
না হলেও ছোঁয়াতে, চোখে হয় ভোগ
সাহসেরা ক্ষুধার্ত - নেই অভিযোগ।
শ্রমিকনেতা, মালিকের মিলনের ফুলে
দেশ-নেতার মুখ থাকে এতসব ভুলে।
বন্দীত্বের যুগে বন্দী ছিল সংসারে
স্বাধীনতার যুগে শ্রমিক অমানুষের দ্বারে।