আছিয়া মরে গেল -
একেবারে আদিকালের প্রথায় গলায় দড়ি দিয়ে।
সামান্য কিছু টাকার অভাবে -
স্বামী ও শ্বশুরালয় থেকে পরিত্যাক্ত,
আরও কিছু লেখাপড়া করে
জীবন যুদ্ধে বিজয়ী সৈনিক হওয়ার যুদ্ধে পরাস্ত,
উদরের ক্ষুধার জ্বালাকে জয় করার সংযম সাধনে অসিদ্ধ,
বাড়ন্ত দেহে যৌবনের পরিপক্ক ফলগুলিকে
পোকার হাত থেকে রক্ষায় কীটনাশক কেনায় অসচ্ছল -
অকালে পিতৃহীন আছিয়া মরে গেল।
কিছু কান্ডজ্ঞানহীন কবি, সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক দোষ খোঁজে -
পাড়াগাঁয়ে ইট-পাথরের বর্ণালী দালান-কোঠার মাঝে,
আছিয়ার বাড়ির পাশে দ্বিতল-আধুনিক মসজিদের মাঝে,
সস্ত্রীক হজ্জের জন্যে কয়মাস আগে মৃত চাচার জমানো সাত লাখ টাকার মাঝে,
মটরবাইক দুর্ঘটনায় চাচার আকস্মিক মৃত্যুতে
তার পরিবর্তে বদলি হজ্জের ব্যাবস্থার মাঝে।
সরকারী তদন্তকারী সংস্থার মতে আছিয়ার এ মৃত্যু দন্ডনীয় অপরাধ -
দেশের উন্নয়নের বন্যাতে খরা ডেকে আনার অপরাধ,
নারী-মুক্তিতে দেশের যে অর্জন তার প্রতি বুড়ো আঙ্গুল দেখানোর অপরাধ,
যে দেশের উন্নয়ন অচিরেই হবে বিশ্বের বিস্ময়, তাতে কলঙ্ক লেপনের অপরাধ,
সর্বোপরি আদিকালের প্রথায় মরে
বিশ্ব-সভ্যতা ও প্রযুক্তির অগ্রসরকে অপমান করার অপরাধ।
এসব অপরাধের যে শাস্তিই হোক, আছিয়া জানে সে বেঁচে গেছে।