বিশ্ব তখন নিমজ্জিত অজ্ঞানতার অন্ধকারে
আকাশ বাতাস প্রকম্পিত নির্যাতিতের হাহাকারে।
মানবতার অবক্ষয়ে পশুর সাথে বিভেদ হারা
সত্য-ধর্ম ব্যক্তি-স্বার্থে - কলুষিত জীবন-ধারা।
রোমান এবং পারসিয়ানদের যুদ্ধ-হত্যা নিত্য খেলা
মানবতার সভ্যতাতে তখন ছিল রাত্রি-বেলা।
বর্বরতায় জগত কাঁপায় করুণাহীন আরববাসী
শক্তিবিহীন মানুষেরা পশুর সম দাস ও দাসী।
আরব রাজা নামেই শাষক - পারসিয়ান বা রোমান দাস
জাতি-গোষ্ঠির সর্দারেরা স্বৈরশাষক, আনতো ত্রাস।
লুটের মালের ভোজন ভাগে আকাশ ছুঁতো অহমিকা
কাব্যগাথায় চলতো শুধু শাষক রাজার তোষণ-টিকা।
নারীর তখন জায়গা ছিল - হয় দেবী নয় বেশ্যাদলে
যুদ্ধ-খুনের রক্ত-হোলি দেবী নারীর পদতলে।
অদেবী সব নারী যারা ভোগ্য ছিল অনেক নরের
পিতা ছিল অন্ধকারে - সন্তান তার নিজ না পরের।
গণককুলের দৈবজ্ঞানে স্রষ্টা যেন নির্বাসনে
একই নারীর দেহভোগে অংশ নিত অনেকজনে।
অনেক পুরুষ এক নারীতে - যদিও নারী বিবাহিতা
গণককুলের দৈবজ্ঞানে বলা হতো কে কার পিতা।
সইতে যারা পারতো নাকো নারীর এমন অসম্মান
জন্মমাত্র কবর দিত আসলে ঘরে কন্যা-সন্তান।
সৃষ্টি হয়েও শক্তিমান যে নিজেই তখন স্রষ্টা সাজে
দুর্বলজন শক্তি খোঁজে নিস্প্রাণ পুতুলের মাঝে।
মুসা এবং ইসার বাণী বদলিয়েছে ধর্মগুরু
ধর্ম দিয়ে ক্ষমতা ও অর্থ লাভের ব্যবসা শুরু।
কনফিউসিয়াসের বিভ্রান্তি স্রষ্টা এবং প্রকৃতিতে
হিন্দু ধর্ম বন্দী তখন জন্ম-জাতের ছোট্ট ভিতে।
সৃষ্টি-সেরা সভ্য মানুষ অসভ্যতার অন্ধকারে
স্রষ্টা তখন নির্বাসনে - শয়তান সব ঘরের দ্বারে।
বিবেক যাদের জ্যান্ত ছিল, মৃত্যু হতো হতাশায়
বিশ্ব-মানবতা কাঁদে শান্তি-আলোর পিপাসায়।
স্রষ্টা ভাবে সাধের মানুষ অল্পদিনেই বিলোপ হবে
তাঁর করুণায় ঐশী আলোর সূর্য ওঠে সেই আরবে।
মা আমিনার মরুর ঘরে উঠল সেদিন এক রবি
দুই জগতের শান্তি নিয়ে ধরায় এলো শেষ নবী।