মাটির পিদিম অথবা কেরোসিন প্রদীপ জ্বেলে
সন্ধ্যে হলে মা বলতেন,
খোকা ওই উঁচু জায়গাটায় রেখে আয়।
আর একটু বড় হয়ে দেখলাম,
যাত্রা মঞ্চের আলোটা টাঙানো হয় উঁচুতে,
থিয়েটার বা সিনেমা সেটের আলোগুলো
প্রক্ষেপিত হয় উঁচু থেকে।
দেখলাম দিনে এবং রাতে আলো আসে ঊর্ধ্ব-আকাশ থেকে।
হৃদয়ের মাঝে অজান্তেই বিশ্বাসের জন্ম হলো -
অন্ধকারে আলো আসে ঊর্ধ্ব থেকে।
জীবনে চলার পথে যখনই অন্ধকার দেখি,
আজও ঊর্ধ্বে দৃষ্টি রাখি আলোর আশায়।
বিদ্যালয়ে আলো প্রাপ্তির মাঝামাঝি এক সময়
মা বললেন,
খোকা, সমাজে আলোর উৎস বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
আর বলতে হয়নি,
বুঝেছিলাম, তাঁদের অবস্থান ঊর্ধ্বে।
ইদানিং বড় কষ্ট পাই,
যখন দেখি,
সেই আলোর উৎস শিক্ষক, সাহিত্যিক, কবি
তলিয়ে যাচ্ছে রাজনীতির চোরাবালিতে,
বিক্রি হচ্ছে বাণিজ্যের পণ্য মেলায়,
অথবা তেলের অভাবে নিভে যাচ্ছে
যে প্রদীপগুলো আদর্শের উঁচু স্থান আজীবন ছাড়তে পারেনি।
সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অন্ধকার আজ,
আলোর প্রত্যাশায় সমাজের দৃষ্টি ঊর্ধ্বাকাশে,
রাত্রির অন্ধকারেও আকাশে তারাদের মিছিল
সমাজের অন্ধকারে আলোর মিছিলের বড়ই অভাব
অন্ধকারের মাঝে আলোর ঝিলিক নেই,
আজন্ম বিশ্বাসের মৃত্যু তবে কী অনিবার্য?
যে সমাজ নিমজ্জিত আজ গহীন অন্ধকারে
সেখানে আসুক নির্মল, উজ্জল, অনির্বান আলোর মিছিল।