মহাম্মদের মক্কার জীবন এখন প্রায় গৃহবন্দী আছে
শুধু রজব ও হজ্জ্বের মাসে মুহাম্মদ যায় হজ্জ্বযাত্রীর কাছে।
যাও বা শোনায় নবীজি তাদের এক আল্লাহর বাণী
আবু জহল ও আবু লাহাব নেয় তাদের অন্যদিকে টানি।
আবু জহল ও আবু লাহাবের মুখে হজ্জ্বযাত্রীরা শোনে
মুহাম্মদ যাদুকর, উন্মাদ, তাদের ধর্মে অবিশ্বাসী মনে।
মূর্খ, শত্রুর হেন অপপ্রচারে অনেকেই হয় আরও উত্সুক
শুনতে চায় মুহাম্মদের বাণী, দেখতে চায় তাঁর মুখ।
এমনিভাবে মক্কার কোরাইশ যত করে মুহাম্মদের অপপ্রচার
মক্কার বাইরে পৌঁছে যায় এক আল্লাহর পথে দেয়া খবর তাঁর।
সুদূর ইয়েমেনের আবু-মুসা গোত্র এইভাবে আসে ইসলামে
দওজ গোত্রে ইসলাম নিয়ে যায় এক কবি তোফাইল নামে।
মুহাম্মদের বাল্যবন্ধু আযদ গোত্রের নেতা, নাম তার ধামাদ
মক্কায় এসে শোনে মুহাম্মদ নাকি হয়ে গেছে পাগল-উন্মাদ।
উত্সুকে কাছে যেয়ে মনোযোগ সহকারে শোনে তাঁর বাণী
নিজে হয় মুসলিম, নিয়ে যায় গোত্রের তরে চরম সত্যখানি।
থাকিফ গোত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ ডাক্তার থাকাফিও আসে উত্সুকে
চিকিত্সায় তাঁর; মুহাম্মদ বদ্ধ-পাগল, শুনে লোকমুখে।
কথোপকথন শেষে মুহাম্মদের চিকিত্সার বিনিময়ে
নিজেই ফিরে যায় মুহাম্মদের ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে।
গিফার গোত্রের আবু-থার একইভাবে করে ইসলাম গ্রহণ
দিকে দিকে বাড়ে জানাজানি এই নতুন নবীর আগমন।
নাজারেথ থেকে এলো এক প্রতিনিধিদল, প্রায় বিশ জন
মুহম্মদের সব শুনে অবশেষে তারাও করে ইসলাম গ্রহণ।
মদীনাবাসী আল-খাজরাজ গোত্রের ছয়জন এসেছিল হজে
মুসলমান হয়ে ফেরে, নবীর মুখে কোরানের বাণীতে মজে।
এমনিভাবে দিনে দিনে মক্কার বাইরে বেড়ে চলে মুসলমান
মক্কার কোরাইশদের হাতে যত বেশী কাঁদে মুসলমানের প্রাণ।
ইসলামের বাণী যত পৌঁছায় মদীনায় বছর বছরে
আরও বেশী মদীনাবাসী হজে আসে মক্কার শহরে।
হয়ে যায় ইসলামে দীক্ষিত, নিয়ে যায় সত্যের শিক্ষা
মক্কায় নির্যাতিত মুসলমান করে মদীনায় সুখবরের প্রতীক্ষা।
ধীরে ধীরে আসে সুখবর, মক্কার নির্যাতিত মুসলমান
মদীনায় আশ্রয় নিতে মক্কা ছেড়ে গোপণে করে প্রস্থান।
নবুয়তের তেরো বছর পর, সে বছর বসন্তে
একশত পঞ্চাশজন মুসলমান মদীনায় যায় আনন্দে।
অতপর ওমর বারোজন সাথীসহ দিবালোকে প্রকাশ্যে
মক্কা থেকে যাত্রা করে মদীনার পথে নির্ভীক-সহাস্যে।
মক্কার কুরাইশ আবার সেদিন পুনরায় উপলব্ধি করে
ইসলাম বিস্তারের শেষ নেই যতক্ষণ না মুহাম্মদ মরে।