মাতৃস্নেহে বঞ্চিত
          মহাভারতের শ্রেষ্ঠ চরিত্র
           কন্যাকালে মাতৃকোলে
                 জনম লভিলে
                   তুমি কানীন
                         কর্ণ
      জৈষ্ঠ্যপুত্র হয়েও পেলে না রাজসিংহাসন
        একটি মাত্র ভুলে মায়ের কামনার ফলে
           তুমি সম্মান রাজসুখ সকলি হারালে
বহু গুনের অধিকারী হয়েও পেলে না নিজ অধিকার
    সারা জীবন প্রতিকুল ভাগ্যকে করেছ স্বীকার  

      অবিবাহিত কালে পিতৃগৃহে কুন্তীভোজ কন্যা
       মাতা কুন্তী যখন ষোড়শী উদ্ভিগ্নযৌবনা
মহর্ষি দুর্বাশা প্রাসাদে এসে করেন আতিথ্য গ্রহন
         কুন্তির সেবায় তিনি অধিক প্রশন্ন হন
   কুন্তিকে দিলেন এক আশ্চর্য মন্ত্র নাম ‘পুত্রেষ্ঠী’
        এই মন্ত্রে করা যায় মনের দেবতার সন্তুষ্টি
  কৌতুহল বসে একদা আহ্বান করেন প্রিয় পুরুষ সূর্য
        তাঁর সঙ্গে মিলনে এক পুত্র হয় অমিতবীর্য
          কবচকুন্ডল সহ জন্ম কর্ণ বীর স্বভাবে
          পৃথিবীতে অজেয় কবচকুন্ডল প্রভাবে
     লোকলজ্জা ভয়ে মাতা ত্যজিল এ হেন পুত্রকে
      নদীজলে ভাসাইল রেখে এক পেটিকা মধ্যতে
  সমাজের মেকি নাগপাশ জয়ী হয় মায়ের হৃদয় থেকে
জীবদের দেখা যায় নিজের প্রান দেয় সন্তান রক্ষার্থে
      কালে কালে কত শিশু বলি হয়ে যায় অকালে
       মাতা অসহায় থাকে সমাজ নিয়মের গোলে
    হেনকালে স্নানরত সূত অধিরথ শিশুকে দেখে
      কোলে নিয়ে অপুত্রক রাধাকে দেন গৃহে গিয়ে
     ক্ষত্রিয়কুলে জন্মেও সূতপুত্র বলে হলে পরিচিত
      বাল্যকাল হতে অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষায় হন আগ্রান্বিত
দ্রোনাচার্যের কাছে তিনি প্রথম ধনুর্বিদ্যার নেন দীক্ষা
মিথ্যার আশ্রয়ে তাঁর পরশুরামের কাছে ব্রহ্মাস্ত্রর শিক্ষা
তাঁর সত্য পরিচয় জানতে পেরে অভিশাপ দেন ক্রোধে
             কার্যক্ষেত্রে এই শিক্ষা ছাত্র বিস্মৃত হবে
একদা ব্রাহ্মণের ধেনু নিহত হয় ভুলক্রমে অস্ত্রশিক্ষাকালে
ব্রাহ্মনের অভিসাপে রথচক্র মেদিনী করবে গ্রাস মৃত্যুকালে
      কর্ণ ছিলেন সাহসী তেজস্বী, একনিষ্ট,,দানশীল ও বীর
চাঁদের ও কলঙ্ক থাকে কর্ণ ছিলেন অর্জুনের প্রতি ঈর্ষাকাতর
                 দুর্যোধনের কুকর্মের তিনিই সহযোগী
                করুক্ষেত্র যুদ্ধের কর্ণ ছিলেন উদ্যোগী

              একদা প্রভাতে কর্ণ সূর্যবন্দনাকালে
                ইন্দ্র প্রার্থনা করেন কবচকুন্ডলে
               সূর্য বন্দনা কালে যে করে প্রার্থনা
            দানবীর কর্ণ পুর্ণ করেন তার কামনা
যুগে যুগে কত না কর্ণ ভাগ্যের সঙ্গে লড়াই করছে
বহু গুনের অধিকারী হয়েও ভাগ্যের পরিহাসে মরেছে
       দৈব বলে বলীয়ান জয়ী হয় অকর্মার ঢেঁকি
            দৈবের একি খেলা এ পৃথিবীতে দেখি
           কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের শেষপর্বে যুদ্ধকালে
               রনাঙ্গনে কর্ণ ব্রহ্মাস্ত্র যান ভুলে
     হেনকালে কর্ণের রথের চাকা মাটিতে যায় বসে
         কর্ণ নেমে চাকা তুলছেন কোমর কসে
     শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শে অর্জুন যুদ্ধনীতিবিরুদ্ধভাবে
        কর্ণকে হত্যা করেন নিরস্ত্র অসহায় মানবে।।