যদি বলো চলে যাও


যদি বলো চলে যাও –
আমি চলে যাব ভোরের কমলা রোদ্দুর
তপ্ত কাঠপোড়া হয়ে ওঠার আগেই।

যদি বলো চলে যাও –
আমি চলে আসব নৈঋতে জমে থাকা মেঘের জলস্রোতে, ঈষাণের বায়ুর মতো দ্রুত বেগে,
ঘাসের উপর ভোরের শিশির শুকিয়ে যাবার
আগে।

যখন চলে আসব –
কোথাও আমার শরীরের ঘ্রাণ রাখব না
ধুয়ে রেখে যাবো বিছানাপত্তর, আমার গায়ের ছোঁয়া লাগা তোমার কাপড়ও।

মুছে দিয়ে যাব সারা বাড়িতে আমার ফেলে রাখা পায়ের চিহ্ন, নামিয়ে ফেলব দেয়াল থেকে যুগল প্রতিকৃতি।

যদি বলো চলে যাও —
ব্যবহৃত তোয়ালে, টুথব্রাশ, পারফিউমের শিশি, তোমার দেওয়া অঙ্গুরীয়, হাতঘড়ি, ব্রেসলেট সব ছুড়ে ফেলে দেবো, সরিয়ে ফেলব এ্যালবাম থেকে সমস্ত প্রণয় ছবি,
কোথাও কোনও অভিজ্ঞান রাখব না।

তুমি চলে যাও বললেই –
ল্যাপটপে ডাউনলোড করা আমাদের প্রিয় গানগুলি ডিলিট করে দিয়ে যাব, যে গানগুলো শুনতাম মৌনতার কোনও বিকেলে ও সান্ধ্য অন্ধকারে।
পুরনো একটি চিঠিও তোরঙ্গে রাখব না, সব ছিঁড়ে ফেলে রেখে যাব।

আমাদের খুনসুটি, বিরাগ, অভিমান, আমাদের অপেক্ষা, প্রণয় উম্মাদনা, মধুময় আলিঙ্গন, কোনও কিছুই মনে গেঁথে নিয়ে যাব না,
সব এই ঘরে তোমার কাছে দগ্ধ ক্ষত করে রেখে যাব।

এই ঘরে রেখে যাব খা-খা শূন্যতা, উঠোনে পড়ে থাকবে ঝরা পাতা,
তুমি জীর্ণ পাতা মাড়িয়ে হেঁটে হেঁটে খুঁজবে আমাকে,
কোথাও পাবে না আামার অস্তিত্ব, আমার ঘ্রাণ, আমার উপস্থিতির ছায়া।

যদি কখনও ঝুমঝুম করে বৃষ্টি নামে, থইথই জলের উঠোনে দাঁড়িয়ে তুমি একাকী ভিজবে, স্মৃতিরা ফিরে আসবে তোমার কাছে, কিন্তু আমি আসব না। মানুষ চলে গেলে মানুষ আর ফিরে আসে না।