বিধাতা কিভাবে সৃষ্টি করলে এমন অদ্ভুত জীব?
যে একই সাথে দুটি সত্তায় অবস্থান করতে পারে।
দেহ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে পারে।
চোখ, জিব, ঠোঁট, ভ্রু এমনকি যৌনাঙ্গ দিয়েও মিথ্যে বলতে পারে।
সে জীবিত থেকেও মৃত্যুর ভূমিকা নিতে পারে।
অনেক সময় কেবল এমনও হয়, যখন সে কেবলই মৃত্যুর ঠাণ্ডা ছোবল বিলিয়ে ফেরে।
সে আমাকে কথা বলতে দেয়,
কিন্তু তুমি তো দেখো, কিভাবে সে অগোচরে আমার টুটি চেপে ধরে।
আমাকে রুক্ষ বলে,
তুমি তো জানো, কী প্রবল ঝর্ণা ধারা আমার ভিতর বয়ে চলে।
মাঝে মাঝে এমনও হয়, এই ঝর্ণা ধারা ঊষর দেহে গড়িয়ে পড়ে।
সে আমাকে পুজো দিতো,
অন্নপূর্ণা ভেবে, সভ্যতার আলো ভেবে, রুগ্ণ দেহের প্রাণসঞ্চারক বায়ু ভেবে।
বিধাতা তুমি তো দেখো,
আমি কেমন শুকিয়ে গেছি,
মৃত্যুর উৎস হয়েছি,
কত শত সভ্যতার প্রাণ নষ্ট করেছি।
তুমি তো জানো, সেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়।
যা আমাকে জরাজীর্ণ বাড়ির ন্যায় উপড়ে ফেলেছে।
তুমি তো চেনো সেই মুখ,
যে মুখ আমার অচেনা হয়েছে।
চেনো সেই নাক, যে ফুলের গন্ধ মাতোয়ারা হতো।
কেমন করে সেই নাক ফুলের গন্ধ ভুলে গেলো?
সে বুঝি ভুলতে বসেছে প্রাণসঞ্চারক সেই মাঠ,
যে চৈত্রে ফেটে চৌচির হয়।
আবার কিছুটা যত্নে ভরিয়ে দেয় পৃথিবীর বুক।
আমি সেই প্রাণ।
আমিই সেই শুকিয়ে যাওয়া নদী।
গতিপথ ভুলে বয়ে চলা সেই জলধারা,
যে আবার গড়ে তুলে সভ্যতা।
আমি সেই অন্নপূর্ণা-১,
যাকে তোমরা মৃত্যুর সিঁড়ি বলো।
এ কেবলই ভ্রম।
বিধাতা তুমি তো জানো,
আমিই সেই দেবী যে তাকে উপাসনা রত করে।
আমি সেই ফুল, হিমু যাকে বলে কিছুটা ভুল।
তুমি তো জানো, সেই সম্পূর্ণ ভুল।
পথভ্রষ্ট, নষ্ট ভ্রষ্ট, পাপিষ্ঠ।
যে ভোর তাকে টানে,
জানো কী? সন্ধ্যাই তাকে ডাকে!
বিধাতা জানো তো তুমি, এইতো আমি কারো ভোর তো কারো সন্ধ্যা।
এসো প্রাণ, দূর করো সেই অবিশ্বাস
যে সুখের খোঁজে দু:খ ফেরি করে।
যে বৃত্ত তাকে, নিজের ই মাঝে বন্দী করে।
বলো বিধাতা, এই কী তোমারই খেলা?
বন্দী বানালে নিজের ই মাঝে।
যাকে মানুষ জাহান্নাম বলে ডাকে!