অহারে মানুষ
মানুষ, যে নাম ধারণ করেছিল সেই মুহূর্তেই, যখন মহাবিশ্বের শ্রেষ্ঠতম জীবের সৃষ্টি সম্পন্ন হয়েছিল।
তার অস্তিত্বের সার্থকতা নিহিত ছিল পরের সেবায়, অথচ সে  কি কখনো তা হৃদয়ে ধারণ করেছিল?
তার রক্তকণিকায় বহমান এক অনির্বচনীয় ঘ্রাণ
যে ঘ্রাণে লুকিয়ে আছে অন্যকে পরাজয় করার অসীম টান।
সে পরাজয় মানুষ যে কি শান্তি পায় জানিনা
সে শান্তি ঘরের ভেতর রাখে নাকি বাইরে তাও জানিনা
তবে এতোটুকু বলতে পারি এই শান্তি খাচায় বন্দী সেই হিংস্র পশুদের আনন্দ দেওয়ার মতো শান্তি
এ শান্তির ভার নিয়ে কি তোমরা মাটির নিচে কবরে আশ্রয় নিতে সক্ষম হবে?
সেই মাটি কি তোমাদের গ্রহণ করবে?
কারণ, যেমন জলও তোমাকে গ্রহন করতে পারেনি, তোমার স্পর্শে সেই সমুদ্র হয়েছিলো অপবিত্র  
সমুদ্রের সেই হাহাকারে শোনা যায় তোমার বদনাম।

তারাই তো তাদের সেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম জীবের শিরোনাম দিয়েছে। শিরোনাম তো সবাই পায়
কিন্তু তোমরা হয়তো জানে না যে শিরোনামের সম্মানটা কিভাবে ধরে রাখতে হবে
কিভাবে ধরে রাখবে এই মিথ্যার আবরণে মোড়া শহরে।
যেখানে ক্ষুধার জ্বালায় দুমুঠো ভাত খাওয়ার জন্য মিথ্যা বলতে হয়।

মানুষ মিথ্যার আশ্রয় নেয় ভয়ে
তবে একটি মিথ্যা য়ে হাজারো মিথ্যা জন্ম দিবে ভাবতে পারেনা
*সে মিথ্যার মিথ্যাতেই মিথ্যুকরা মিথ্যা বলে*

তারা বলে, ‘আমি শ্রেষ্ঠ’
কিন্তু শ্রেষ্ঠত্ব কি মিথ্যার বোঝা বহন করে?
এই মিথ্যাচ্ছন্ন দেহ কি প্রকৃতির কোলে আশ্রয় নিতে পারবে?
এ মিথ্যা ভরা দেহ তো মাটি সহ্য করতে পারবেনা
এই শরীর যখন মাটিকে স্পর্শ করবে তখনই সেই মিথ্যার জালায় মাটি চিৎকার করে উঠবে
আমরা হয়তো সেই হাহাকার শুনতে পারবো না
কারণ আমাদের শ্রবণ শক্তি তো মিথ্যার আবরণে আবদ্ধ।
আমরা কখনো প্রকৃতিকে অনুভব করতে পারবো না কারণ প্রকৃতি আমাদের এই নিষ্ঠুরতা সহ করতে পারবে না
আমরা কখনো হাঁটতে হাঁটতে প্রকৃতি অনুভব করতে পারবো না কারণ আমাদের এই গুটি গুটি পায়ে হাটার মধ্যে লুকিয়ে আছে মিথ্যা।
এ মিথ্যা তো মেনে নিতে পারবে না প্রকৃতি
এ মিথ্যার স্তূপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাড়তে বাড়তে পরিণত হচ্ছে হিমালয় পর্বতে।

অবশেষে, একদিন এই মিথ্যার পাহাড় ভেঙে পড়বে নিজের ভারেই।
প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করবে নীরবে, ধ্বংসের সুর বাজবে শূন্যে।
তবু মানুষ কি বুঝবে?
নাকি তখনো মিথ্যার আবরণে নিজেকে আড়াল করবে?
সময়ের স্রোত বয়ে যাবে, কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যাবে চিরকাল
মানুষ কি সত্যিকারের মানুষ হতে পেরেছিল?