বাংলা সাহিত্যের প্রধান ও প্রাচীন ধারা হলো কাব্য বা গীতিধর্মী। প্রাচীনকাল থেকে মধ্যযুগ পর্যন্ত সাহিত্যের একমাত্র রীতি ছিল কাব্যপ্রধান। (যেমন, চর্যাপদ- শ্রীকৃষ্ণকীর্তন- বৈষ্ণব পদাবলি-চৈতন্যজীবনীসাহিত্য- মঙ্গলকাব্য- শিবায়ন কাব্য- নাথ সাহিত্য- বাউল সাহিত্য )
কথাশিল্পী ও সাহিত্য-পন্ডিতদের মতে, ছন্দোবদ্ধ ভাষায় ( মানে, পদ্যে) যা লিখা হয় তাই কবিতা।*(হায়াৎ মামুদ) কবিতার প্রধান দুটি রূপ হলো-মহাকাব্যধর্মী ও গীতিকবিতা। আধুনিককালে যা লিখিত হচ্ছে তা গীতি কবিতারই বিবর্তণবাদ(!)। প্রথমোক্তটি গল্প প্রধান এবং দীর্ঘ রচনা আর পরেরটি সংক্ষিপ্ত ও বর্ণনাধর্মী। প্রাচীনকাল ও মধ্যযুগে আমরা গীতিকাব্যে কয়েকটি ধারা দেখতে পাই। যেমন- গীতিকা (পল্লীগাথা, লোকগাথা), ছড়া (প্রবচন, খনার বচন, ডাকের বচন এবং লোক ছড়া)এবং পুঁথি। বর্তমানেও ছড়া, কবিতা, অণূকবিতা বিদ্যমান। কবিতার প্রাকআধুনিক যুগ ধরা হয় ১৮০০ খ্রী. থেকে ১৯০০খ্রী. পর্যন্ত। আর আধুনিক যুগ ধরা হয় রবীন্দ্র পরবর্তী যুগ( ১৯০০ খ্রী, পর) থেকে।*(বাংলা সাহিত্য পরিচয়)

আধুনিক কবিদের তালিকায় যাদের থেকে গণ্য করা হয় তারা হলেন- রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল, সুকুমার রায়, জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত।

কাব্যধারা তথা পদ্যের রূপান্তর ও বৈশিষ্ট্যে নতুনত্ব যোগ হলেও কবিতার মুল উপাদান হচ্ছে- ছন্দোবদ্ধতা ও ভাবের পরিস্ফুটন। যা ভাঙ্গা যাবে, ব্যখ্যার অবকাশ থাকবে, ভাবের সম্প্রসারণ ঘটবে। এক সময় অন্তমিলের কবিতার চর্চা হতো ও প্রাধান্য পেতো। আধুনিকোত্তর কবিতায় অন্তমিলের চেয়ে ভাবের প্রকাশ বেশি দেখা যায়। যে কবিতায় ভাব সম্প্রসারণের সুযোগ নেই বা যা পাঠককে ভাবনায় ফেলে না তা আর যাই হোক কবিতা হতে পারে না। সৃষ্টিশীলকর্ম ও সমাজ বিনির্মাণে কবিতার বিকল্প নেই।

কবিতায় বক্তার ভাবের বহি:প্রকাশ ঘটে অল্পকথায় এবং পাঠক তাতে ভিন্ন রসের স্বাদ পায়। ভাব সম্প্রসারণের সুযোগ না থাকলে কবিতার সার্থকতা নেই বললেই চলে। তাই কবিতার সার্থক রচনা হয়ে উঠে যা ভাব সম্প্রসারণমুখি।

xxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxxx
পুনশ্চ: কখনো এই বিষয়ে লিখতাম না বা লেখার সুযোগ হতো না  যদি না কবিতায় আধুনিকতার নামে এই আসরে বিতর্কের ধারা সৃষ্টি না হতো। আমার সকল কবিবন্ধুদের ধন্যবাদ জানাই কবিতার নতুন ধারার সৃষ্টির প্রায়াসের জন্য। আরো ধন্যবাদ এডমিন মহোদয়কে । আধুনিক কবিতার বৈশিষ্ট্য ও বিবর্তণবাদের সুযোগে আমাদের কি করা উচিত!
সবাইকে এই বিষয়ে বিতর্ক  (আলোচনা/ সমালোচনায়')করার আহ্বান জানাচ্ছি।